আবু সাইদ শওকত আলী, বিশেষ প্রতিনিধি:-
মাগুরায় চাঞ্চল্যকর শিশু আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১২ মে, সোমবার। মাগুরা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম. জাহিদ হাসান বৃহস্পতিবার দুপুরে এ আদেশ দেন।
মামলার ধারাবাহিক কার্যক্রম অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান
অভিযুক্ত হিটু শেখসহ সকল আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। ঝিনাইদহ জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় তাদের আদালতে আনা হয়।
আদালতে সাক্ষীদের জবানবন্দি শুনে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে আসামিপক্ষ কোনো সুনির্দিষ্ট দলিল বা সাফাই সাক্ষী উপস্থাপন করতে না পারায় বিচারক আগামী ১২ মে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় শিশু আছিয়ার বোনের শ্বশুর হিটু শেখের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(২) ধারায়
(ধর্ষণের ফলে মৃত্যু) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। একই মামলায় আছিয়ার বোনের স্বামী ও ভাশুরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারার (২) উপধারায় (ভয়ভীতি প্রদর্শন)
এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট করা) অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, গত ৬ মার্চ মাগুরা সদর উপজেলার নিজনান্দুয়ালী গ্রামে ৮ বছর বয়সী শিশু আছিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়।
গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ মার্চ সে মৃত্যুবরণ করে।
ঘটনার পরদিন শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে গত ১৩ এপ্রিল পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে এবং ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
২৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয় সাক্ষ্যগ্রহণ।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল সাংবাদিকদের জানান,
“এই মামলায় আমরা দ্রুত বিচার কাজ সম্পন্ন করতে চাই। আসামিরা নির্দোষ দাবি করলেও তাদের পক্ষে কোনো সপক্ষে প্রমাণ নেই।
১২ মে যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে অচিরেই এই মামলার রায় দেওয়া হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
তিনি আরও বলেন, “মাগুরার মানুষ এই নির্মম ঘটনার সুবিচার প্রত্যাশা করছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।”
এই মামলা ইতিমধ্যে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং দেশের বিভিন্ন মহলেও আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
মাগুরাবাসী এখন তাকিয়ে রয়েছে ১২ মে’র দিকে, যেদিন উপস্থাপিত যুক্তিতর্কের ভিত্তিতে ন্যায়বিচারের আরেকটি অধ্যায় রচিত হতে পারে।