ঝিনাইদহে দুই গ্রামের সংঘর্ষে আহত শতাধিক, ভাঙচুর-লুটপাটে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ:-

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার চরপাড়া বাজারে মাছ কেনাবেচা নিয়ে বিরোধের জেরে দুই গ্রামের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জন আহত হয়েছেন। রবিবার বিকেলে

তিন ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে বাজারের অন্তত ২০টি দোকান ভাঙচুর ও ব্যাপক লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হয়।

শনিবার বিকেলে হরিণাকুন্ডুর চরপাড়া ও শৈলকুপার মাইলমাড়ী গ্রামের লোকজনের মধ্যে মাছ কেনাবেচা নিয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।

এরপর রবিবার সকালে পোড়াহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রকে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুই গ্রামের শত শত মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

চরপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, সংঘর্ষের সময় মাইলমাড়ী গ্রামের লোকজন সংঘবদ্ধভাবে বাজারে হামলা চালায়, দোকানপাট ভাঙচুর করে এবং প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বাধা দিতে গেলে তারা হামলার শিকার হন।

পোড়াহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ জানান, বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র রিফাতের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর মারামারির ঘটনা থেকে এই উত্তেজনা শুরু হয়। পরে তা ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নেয়।

রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন বলেন, “মাছ কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে যে বিরোধের সূচনা হয়েছিল, তা পরে সংঘবদ্ধ হামলায় রূপ নেয়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হন।”

খবর পেয়ে হরিণাকুন্ডু থানা ও চরপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় পরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।

হরিণাকুন্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বি এম তারিকুজ্জামান বলেন, “সংঘর্ষের খবর পেয়েই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।”

হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ বলেন, “আমরা অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করতে পারিনি। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

এ ঘটনায়  এলাকাজুড়ে  উত্তেজনা  বিরাজ  করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *