চুয়াডাঙ্গায় ট্রেন থেকে ফেলে গাফফার আলীকে হত্যার প্রতিবাদে ট্রেন থামিয়ে জীবননগরে  মানববন্ধন, সুষ্ঠু বিচারের দাবি

জীবননগর অফিস:

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী ওরফে আকাশকে (২৯) চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করার অভিযোগে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে উথলী স্টেশনে ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নবাসী ও নিহতের শোক সন্তপ্ত পরিবারের উদ্যোগে উথলী রেলস্টেশন চত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

ঘণ্টাব্যাপী চলা এই কর্মসূচিতে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী ৭১৫ আপ কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছু সময়ের জন্য উথলী রেলস্টেশনে আটকে রাখা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জীবননগর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উথলী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ, তালিমুল কুরআন বিভাগের সভাপতি মাওলানা মহিউদ্দিন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান, নিহত আকাশের বাবা-মা, স্ত্রীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন,চলতি বছরের গত ২১ মে বিকালে চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী গাফফার আলী কর্মস্থল থেকে খুলনাগামী ৭১৬ ডাউন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিলেন। দর্শনা হল্ট স্টেশনে নামার কথা থাকলেও জয়রামপুর রেলস্টেশনের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে তাকে ফেলে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে রেললাইনের পাশে তার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পকেটে থাকা পরিচয়পত্র দেখে স্থানীয়রা তার পরিচয় শনাক্ত করেন।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল এটি একটি দুর্ঘটনা। তবে পরবর্তীতে ট্রেনের যাত্রীদের কাছ থেকে জানা যায়, গাফফার আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিনা টিকিটে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা আদায় নিয়ে ট্রেনের টিটিই ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া হয়।

ঘটনার পাঁচ দিন পর, ২৬ মে নিহতের বাবা জিন্নাত আলী চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে ওই ট্রেনে দায়িত্বরত জুনিয়র টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), জিআরপি’র এসআই পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০), অ্যাটেনডেন্ট মিলন (৩৭), সোহাগ মিয়াসহ আরও ৪-৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিনা টিকিটে যাত্রীদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় এবং গাফফার আলীর প্রতিবাদ করায়, ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা তাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করে।

বক্তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তারা বলেন, অন্যথায় তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *