আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ইউনুছ আলী (৬২) চিকিৎসাধীন
অবস্থায় মারা গেছেন। বুধবার (৪ জুন) সকালে যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ‘ইবনে সিনা’-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে, ১ জুন (রোববার) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের
তালিয়ান শ্মশানঘাট এলাকায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহত হন ইউনুছ
আলীর ছোট ভাই মহব্বত আলী (৫৮)। সংঘর্ষ চলাকালে অস্ত্রধারীরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং ঠেকাতে গেলে বড় ভাই ইউনুছ আলীকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
নিহত মহব্বত আলী ও ইউনুছ আলী উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামের মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে।
মহব্বত আলী হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে ইনামুল হক বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা
মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৫৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি
করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কোলা
ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ডা. নুরুল ইসলামকে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিরা সবাই কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের
সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনের বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী
সাইফুল ইসলাম ফিরোজের অনুসারী।
মামলা দায়েরের পর নানা নাটকীয়তার পর মঙ্গলবার বিকেলে সেটি রেকর্ডভুক্ত করে
কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ইউনুছ আলীর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “দুই ভাইয়ের
মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এখন পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের
ধরতে অভিযান চলছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
এদিকে, মনোনয়নপ্রত্যাশী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, “এটি সম্পূর্ণ সামাজিক আধিপত্য
বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। এর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।”
দুই বিএনপি কর্মীর মৃত্যুতে কালীগঞ্জে উত্তেজনা বিরাজ করছে, পরিস্থিতি শান্ত রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।