মহেশপুর প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের মহেশপুরে কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন ও জমির ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেতা ও মহেশপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা ও মহেশপুর পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজীবউদ্দৌলা নাসের বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। বুধবার (৪ জুন) ঝিনাইদহ দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি গ্রহণ করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন—সাবেক মেয়র আব্দুর রশিদ খান, তার ভাই মনিরুল ইসলাম ওরফে মিন্টু খান, পিন্টু খান, যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম,
একই বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা আসাফ-উদ-দৌলা, মহেশপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুস সালাম, রুহুল আমিন মিন্টু ও আব্দুল মান্নান, ফতেপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ হোসেন এবং ঠিকাদার বাদল মিয়া (যশোর)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০২২ সালের ২২ জুলাই থেকে মহেশপুর উপজেলার নিমতলা ফতেপুর মৌজার কপোতাক্ষ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়।
অভিযোগে বলা হয়, তৎকালীন মেয়র আব্দুর রশিদ খান ও তার ভাই মিন্টু খানের নেতৃত্বে এই কার্যক্রম চালানো হয়।
বালু উত্তোলনের ফলে নদীর পাড়ে ভাঙন সৃষ্টি হয় এবং নজীবউদ্দৌলা নাসেরের মালিকানাধীন ও লিজ নেয়া প্রায় তিন বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এতে মাল্টা, পেয়ারা ও অন্যান্য ফলের গাছসহ প্রায় ১৫০টি মেহগনি গাছের ক্ষতি হয় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
ক্ষতির প্রতিকার চেয়ে নাসের তৎকালীন জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ জানালেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
পরে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর, গত বছরের ৫ আগস্ট পুনরায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বরাবর অভিযোগ করেন তিনি।
এরপর খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশে গত ৭ নভেম্বর মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
দীর্ঘ ছয় মাসেও কোনো আইনি প্রতিকার না পেয়ে নজীবউদ্দৌলা নাসের এবার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দায়েরের পর ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের কোনো বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে তার পরিবারের দাবি তিনি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রতিহিংসার শিকার। ঘটনার সাথে তাকে জড়িত করার মত কোন প্রমান উপস্থাপন করা যাবে না।