আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
‘ঝিনাইদহের উন্নয়নে আমরা সবাই একসাথে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করলো
ঝিনাইদহ উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের আহার রেস্টুরেন্টের অডিটোরিয়ামে এক
জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটির যাত্রা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম। কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, তেলাওয়াত করেন সংগঠনের সদস্য আবু সালেহ।এরপর ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন ইনজামামুল হক ও আল মিরাজ।
ঝিনাইদহ জেলার শিক্ষা, যোগাযোগ, চিকিৎসা, ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং সম্ভাবনা নিয়ে তিনটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়, যা দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে।
কমিটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি মো. আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, কমিটি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে সমন্বয় করে জেলার সার্বিক উন্নয়নে কাজ
করবে। অনুষ্ঠানে ডিজিটাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে কমিটির সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবুল বাশার বলেন,
“ঝিনাইদহের দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত দাবি বাস্তবায়নই আমাদের মূল লক্ষ্য।” এসব দাবির মধ্যে রয়েছে:ঝিনাইদহে মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা,ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ-মাগুরা
মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণ,রেললাইন সম্প্রসারণ,
পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন,জেলার শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন‘ক্লিন ঝিনাইদহ’ কর্মসূচির
বাস্তবায়নে তিনি আরও বলেন, “এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে জেলার অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও শিক্ষায় মৌলিক পরিবর্তন আসবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান,
শিল্পপতি প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. একেএম কামাল হোসেন, গাইনী কনসালট্যান্ট ডা. মাফিয়া খাতুন, সমাজসেবক
গাউছ গোর্কি, সরকারি কেসি কলেজের সাবেক শিক্ষক শেখ মো. আলী, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের
সভাপতি আসিফ ইকবাল কাজল, সাবেক শিক্ষা অফিসার মেশারফ হোসেন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, “ঝিনাইদহ হলো উর্বর মাটির জনপদ। এখানকার মানুষ কর্মঠ ও পরিশ্রমী
হলেও, এখনও কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের ছোঁয়া পায়নি। রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃত্বের পাশাপাশি
সাধারণ জনগণেরও সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।”
তারা আরও বলেন, “পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের আওতায় রেললাইন মাগুরা থেকে ঝিনাইদহ পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে হবে।
পাশাপাশি ঝিনাইদহ-মাগুরা ফোর লেন সড়ক, মেডিকেল কলেজ ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিও জোরালোভাবে তুলে ধরেন তারা।”
অনুষ্ঠান থেকে আগামী ১৪ জুন সকালে চিকিৎসা সেবার উন্নয়নের দাবিতে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত চিকিৎসক, শিক্ষক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সমাজসেবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এই সমন্বয় কমিটির উদ্যোগ জেলার সার্বিক উন্নয়নে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।