বিশেষ প্রতিনিধি :-
ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে স্থাপিত এ ভাস্কর্যটি ছিল নজরুলের স্মৃতি ও চেতনার এক প্রতীক।
ভাস্কর্যটি ভাঙার খবরে শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সাধারণ মানুষদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে
পড়েছে। দেশজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ পুকুরসমূহের সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায়
ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়। তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের পরিকল্পনায় ভাস্কর্যটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়।
পরে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম।
ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন (LGUD)
বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা দপ্তর যেন বারবার
সৃজন ও ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে। প্রতিবার উপাচার্য পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মাস্টারপ্ল্যান
বদলানো হয়। কিন্তু ‘অঞ্জলি লহ মোর’-এর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক নিদর্শন ভেঙে ফেলা
কোনো পরিকল্পিত দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সৌখিন আহমেদ বলেন,পুরাতন কলা ও বিজ্ঞান ভবনের মাঝখানে যে পুকুরঘাট ও বসার জায়গা ছিল, তা ভেঙে তৈরি হয়েছিল ভাস্কর্যটি।
অথচ ছুটির সময়ে শিক্ষার্থীদের অজান্তেই সেটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। এতে শুধু নজরুল চেতনার অবমাননা নয়, জনগণের কষ্টার্জিত অর্থেরও অপচয় হয়েছে।
এ ঘটনায় নজরুল অনুরাগী ও প্রগতিশীল মহলে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে।
অনেকে এই ধরণের কর্মকাণ্ডকে নজরুল-বিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ এবং সাংস্কৃতিক বর্বরতা বলে আখ্যায়িত করেছেন।
নজরুলচেতনার পক্ষে থাকা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সংস্কৃতিকর্মী এবং নাগরিক সমাজ দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।