নিজস্ব প্রতিবেদক:-
আসন্ন ২৮ জুন জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় সম্মেলন ঘিরে দলে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সম্মেলন সফল করতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলটির জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশ।
অন্যদিকে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি এই সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আপস করবেন না।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের আয়োজন না হলেও রাজধানীর
কাকরাইলস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করার প্রস্তুতি চলছে। এ লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবার সম্মেলনের অন্যতম লক্ষ্য হলো গঠনতন্ত্রের ২০ ধারার (ক)
উপধারায় সংশোধনী আনা, যাতে একক ও কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের পরিবর্তে যৌথ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যায়।
এই সম্মেলনের উদ্যোক্তা হিসেবে দলের দুই শীর্ষ নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারের নাম সামনে এসেছে।
তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন দলের সাবেক ও বর্তমান আরও একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা এবং বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রতিনিধিরা।
তবে এখনও এ সম্মেলনের জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি পাওয়া যায়নি।
আয়োজকরা আশা করছেন, রোববারের মধ্যে অনুমতি মিলবে, আর তখনই সম্মেলনের চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে।
এই সম্মেলনকে ঘিরে ইতোমধ্যেই দলীয়
নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বিধা ও বিভক্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, নেতৃত্ব নিয়ে দলে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেন, “ওনাদের সঙ্গে আমি আর রাজনীতি করতে চাই না। তাঁরা শেখ হাসিনার সময়েও আমাকে অনেক
যন্ত্রণা দিয়েছেন, আবার এখনো সেটি শুরু করেছেন।
তারা যা ইচ্ছা করুক প্রয়োজনে রাজনীতি ছেড়ে দেব, কিন্তু নীতি ছাড়ব না।”
তিনি আরও জানান, দলীয় সম্মেলনের জন্য চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের বরাদ্দ বাতিল হওয়ায়
কেন্দ্রীয়ভাবে নির্ধারিত সম্মেলন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। অন্যদিকে দলের আরেক অংশ নিজ উদ্যোগে কাকরাইলে সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে, যা নিয়ে দলীয় পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে জাতীয় পার্টি থেকে বেরিয়ে গঠিত অন্যান্য দলের শীর্ষ
নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোর উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে, যা এই সম্মেলনের রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তুলছে।
দলীয় ভাঙনের আশঙ্কার মধ্যেই চলমান এ পরিস্থিতি জাতীয় রাজনীতিতে জাপার অবস্থান ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে নতুন করে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।