নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহে অধিকার-এর মানববন্ধন

ময়মনসিংহ অফিস:_

জাতিসংঘ ঘোষিত ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে মানবাধিকার

সংগঠন অধিকার ময়মনসিংহ নেটওয়ার্ক এক মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন ‘অধিকার’-এর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সমন্বয়কারী ও সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুম।

কর্মসূচিতে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগী, মানবাধিকারকর্মী, সাংবাদিক, পেশাজীবী,

রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট নূরুল হক,

ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক নয়া দিগন্তের স্টাফ রিপোর্টার সাইফুল

ইসলাম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হান্নান খান, এনসিপি জেলা সদস্য মোজাম্মেল

হক, দৈনিক দিগন্ত বাংলার সম্পাদক আনম ফারুকসহ আরও অনেকে।

এছাড়াও বক্তব্য রাখেন পুলিশি নির্যাতনের শিকার শিক্ষক এসএম রায়হান, ছাত্র আন্দোলনে

নির্যাতনের শিকার মাহদী হাসান তারেক এবং গুমের শিকার হয়ে ফিরে আসা ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা, রাশেদ ও বাছেদ।

কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সাজ্জাতুল ইসলাম, আব্দুল আউয়াল, আব্দুস

সাত্তার, আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাওসার আহমেদ, আরিফ আহমেদ, সাইফুল ইসলাম তরফদার,

মনির হোসেন ও রাশেদুজ্জামান রনি প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রভাবিত নির্যাতন আজ একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।

স্বাধীনতার পর সব সরকারের আমলেই নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও বর্তমান সরকারের সময়ে তা

ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছে। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং রিমান্ডে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।

‘অধিকার’-এর পরিসংখ্যান তুলে ধরে বক্তারা জানান, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪

সালের আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ১৮২ জন ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনে মারা গেছেন।

এছাড়া ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২০ জুন পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে

আরও ১০ জন ব্যক্তি হেফাজতে মৃত্যু বা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

বক্তারা বলেন, সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ এবং ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন,

২০১৩’ অনুযায়ী যেকোনো ধরনের নির্যাতন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

তারপরও থানা, গোয়েন্দা হেফাজত, ডিটেনশন সেন্টার ও গোপন বন্দিশালায় প্রতিনিয়ত মানুষ নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন।

তারা আরও বলেন, বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব, তদন্তের দুর্বলতা ও দায়মুক্তির সংস্কৃতি

নির্যাতনকে আরও উৎসাহিত করছে। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা প্রায়ই বিচারপ্রার্থী হওয়ার সাহস পান না; বরং আরও নিপীড়নের আশঙ্কায় নীরব থাকেন।

বক্তারা মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, নির্যাতন

মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের অন্তরায়। নির্যাতনবিরোধী

সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি সকল স্তরের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা ‘অধিকার’-এর পক্ষ থেকে দেশের মানুষকে নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান এবং

মানবাধিকারের পক্ষে একটি ন্যায্য ও দায়বদ্ধ রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *