আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় কবি দাউদ আল হাফিজ এর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা ও স্মারকবক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আয়োজিত সভায় আলোচকগণ বলেন, নব্বই দশকের অন্যতম কবি দাউদ আল হাফিজ এর
জন্ম ১৯৬৫ সালের ১৪ এপ্রিল শৈলকুপার কবিরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৮১
সালে শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে যশোর শিক্ষাবোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে মেধা
তালিকায় ২য় স্থান অর্জন করে শৈলকুপাবাসিকে তাক লাগিয়ে দেন।
তার কৃতিত্ব ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। পরবর্তিকালে ১৯৮৩ সালে ঢাকা কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে কৃতিত্বের সাথে এইচ এস সি পাশ করেন।
সুযোগ পান রাজশাহী মেডিকেলে পড়ার কিন্তু তিনি সাহিত্যের নেশায় ভর্তি হন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৮৬ সালে স্নাতক সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন।
সে সময় আর মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীকালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের
সান্ধ্যকালিন কোর্স থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
সোমবার ৩০ জুন বিকেলে সূর্যবন্ধন খেলাঘর আসর এর আয়োজনে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক
সমিতি ভবনে স্মরণসভা ও স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সূর্যবন্ধন খেলাঘর
আসরের আহবায়ক মাসুম বিল্লাহ। খেলাঘর বন্ধু জেনিন এর সঞ্চালনায় স্মারক বক্তব্য উপস্থাপন
করেন শৈলকুপা পাবলিক হল ও লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক স্বপন বাগচী। আলোচকেরা
আরো বলেন, ১৯৯৩ সালে TS Elliot নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। পরে “আনাবাস অথবা
দ্বিধার গন্ধম” নামে আর একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পায়। দেশের শীর্ষস্থানীয় দৈনিকে তিনি
লেখালেখি করতেন। শৈলকুপায় শিশুদের জন্য তিনি একটি ইংরেজি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন “নিভাডা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল” নামে ।
কয়েকবছর পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কিছুদিন
শিক্ষকতা করেছেন। মুক্তমনা, স্বাধীন চেতা মানুষ ছিলেন কবি দাউদ আল হাফিজ। সকলের থেকে
সবক্ষেত্রেই একটু আলাদা ধাচের। তিনি লেখালেখি, সাহিত্য আড্ডা পছন্দ করতেন।
বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আলমগীর অরণ্য, ক্রীড়া ব্যাক্তিত্ব সাধন বিশ্বাস ,প্রভাষক হাবিবুল
আলম, সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা সুশান্ত সাহা,
সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল জলিল জোয়াদ্দার, কবি গোলাম মোস্তফা মাধ্যমিক
বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ফিরোজ খান নুন প্রমুখ। অনুষ্ঠিত বক্তৃতারা উল্লেখ করেন,
প্রয়াত কবি দাউদ আল হাফিজ দক্ষতার সাথে অনুবাদ, সমালোচনা, সম্পাদনা, ছবি আঁকতে
পছন্দ করতেন। শৈলকুপা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি স্মরণিকা, মুস্তাফা
মনোয়ার এর সংবর্ধনা স্মরণিকা সহ বেশকিছু স্মরণিকা সম্পাদনা করেন । ড. খন্দকার
আশরাফ হোসেন সম্পাদিত একবিংশ পত্রিকার তিনি সহকারী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন
২০০১ সাল পর্যন্ত। ঢাকার যান্ত্রিক জীবন ত্যাগ করে দীর্ঘদিন নানা সংকটের মধ্যে দিয়ে
শৈলকুপায় পরিবারের সাথে বসবাস করতেন। কবি দাউদ আল হাফিজ এক পুত্র এক কন্যা সন্তানের জনক। তিনি ২০২০ সালের ২৯ জুন মৃত্যুবরণ করেন।