গঞ্জের খবর ডেস্ক:
ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর এলাকায় বাড়িভাড়া চাওয়াকে কেন্দ্র করে ক্লিনিক মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
রোববার (২৯জুন) দিবাগত মধ্যরাতে ভবন মালিক শরীফ আহম্মেদের বাসভবনে এই হামলা চালানো হয়।
ঘটনাটি ঘিরে সিসিটিভি ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনা বিস্তারিত:
ভবনের মালিক ও ঠিকাদার শরীফ আহম্মেদ অভিযোগ করে জানান, তার চারতলা ভবনের চারটি
ফ্লোর মাসিক ২ লাখ টাকার চুক্তিতে রাবেয়া ক্লিনিকের মালিক সোহেল রানা ভাড়া নেন এবং
দীর্ঘদিন ধরে ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছেন। তবে গত সাত মাস ধরে কোনো ভাড়া পরিশোধ না করায়
ভাড়াবাবদ মোট ১৪ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া ভাড়া চাইতেই এ হামলা চালানো হয় বলে দাবি তার।
সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, মধ্যরাতে সোহেল রানা দলবল নিয়ে ভবনের সামনে উপস্থিত হন। শরীফ
আহম্মেদ নিচে নামলে তাকে গালিগালাজ করা হয় এবং একপর্যায়ে সোহেল রানার সঙ্গীরা তাকে
মারধরের চেষ্টা করেন। ফুটেজে শরীফ আহম্মেদকে একজন ঘুষি মারতেও দেখা যায়।
অতীত বিরোধ ও অভিযোগ:
শরীফ আহম্মেদ বলেন,ভবন ভাড়া নিয়ে ক্লিনিকের নামে নানা অনৈতিক কাজ করছিলেন সোহেল রানা।
এসব কাজে বাধা দিলে এর আগেও প্রায় ১০ বার আমাকে হেনস্তা ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সোহেল রানা শুধু ভাড়া দেননি তাই নয়, বরং ভবনের পরিবেশ নষ্ট করে
চলেছেন। আমি আইনানুগ পথেই ভাড়া দাবি করেছি, কোনো চাঁদা চাওয়া হয়নি।
সোহেল রানার পাল্টা দাবি:
এদিকে অভিযুক্ত রাবেয়া ক্লিনিকের মালিক সোহেল রানা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কেন
তাকে চাঁদা দেব? বরং সে নিজেই বারবার এসে চাঁদা দাবি করেছে এবং আমার স্টাফদের গায়ে পর্যন্ত হাত তুলেছে।
তিনি আরও দাবি করেন, শরীফ আহম্মেদ আমার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন, যা এখনও ফেরত
দেননি। তার অভিযোগ ভিত্তিহীন, তিনি উল্টো আমাকে হয়রানি করছেন।
প্রশাসনের অবস্থান:
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ভবন মালিক
শরীফ আহম্মেদ মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। আমরা তাকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।
অভিযোগ পেলে ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা:
এই ঘটনাটি শুধু একটি ভাড়াটিয়া ও বাড়ির মালিকের মধ্যকার ব্যক্তিগত বিরোধ নয়, বরং এতে আইনের
শাসন, চাঁদাবাজি ও ভাড়াবাবদ পাওনা আদায় সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রশ্ন উঠে আসে।
একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান যখন একটি বাসভবনে
পরিচালিত হয়, তখন উভয় পক্ষের মধ্যে চুক্তি, স্বচ্ছতা এবং নিয়মিত লেনদেন নিশ্চিত করাই পারে এমন সংঘাত এড়াতে।
ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনে সঠিক তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ সময়ের দাবি।