শৈলকুপায় শেষ খালের ব্রিজ ভেঙে দুর্ভোগে শিক্ষার্থীসহ ২০ গ্রামের মানুষ বৃষ্টির দিনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে শিশু ও বৃদ্ধরা

আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ “শেষ খাল”-এর উপর নির্মিত একমাত্র সেতুটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে পড়েছে। এতে আশপাশের অন্তত ২০ থেকে

৩০টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়ছে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কৃষক, দিনমজুর এবং অসুস্থ রোগীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শৈলকুপা উপজেলার চরপাড়া, কালিগঞ্জপুর, দৌলতপুর, বাহিরচর,

খালিশপুরসহ অন্তত ২০টিরও বেশি গ্রামের মানুষ এই ব্রিজটি ব্যবহার করে প্রতিদিন উপজেলা শহর,

বাজার, স্কুল-কলেজ এবং কৃষি ফসল পরিবহনের কাজ করেন। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী।

ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় একটি কলেজ, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

রয়েছে। এই তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিক্ষার্থী প্রতিদিন যাতায়াত করে।

এখন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা ব্রিজের

পাশে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি অস্থায়ী সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে। বৃষ্টির দিনে এটি হয়ে উঠছে আরও বিপজ্জনক।

স্থানীয় অভিভাবক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,

আমার ছেলে প্রতিদিন এই ভাঙা ব্রিজ পেরিয়ে স্কুলে যায়। প্রতিদিন চিন্তায় থাকি—না জানি কবে দুর্ঘটনা ঘটে। কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

খালের এপারে বহু কৃষিজমি এবং বাজার থাকায় কৃষকরা নিয়মিত মালামাল বহন করে এই ব্রিজ দিয়ে।

কিন্তু এখন মালবোঝাই গাড়ি তো দূরের কথা, হেঁটেও চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ফল, সবজি, ধান, গম ও অন্যান্য কৃষিপণ্য বাজারজাত করা বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান,ব্রিজ না থাকায় আমাদের খরচ বেড়েছে তিনগুণ। এখন ঘুরে অন্য রাস্তা দিয়ে যেতে হচ্ছে, যা সময় ও পণ্যের ক্ষতির কারণ হচ্ছে।

ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে প্রায় তিন মাস আগে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগে

বারবার জানানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সংস্কার বা নতুন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা অবিলম্বে নতুন একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন,এভাবে

চলতে থাকলে যে কোনো দিন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

তারা চান, জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী হলেও একটি সেতু নির্মাণ করে চলাচল স্বাভাবিক করা হোক এবং দীর্ঘমেয়াদে পাকা ব্রিজ নির্মাণে বরাদ্দ নিশ্চিত করা হোক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *