হরিণাকুন্ডুতে পরকীয়ার জেরে স্বামী খুন: স্ত্রী ও প্রেমিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-

ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভালকী গ্রামে স্বামী হত্যার অভিযোগে স্ত্রী রিতা খাতুন ও তার পরকীয়া

প্রেমিক আব্দুল মালেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাদের প্রত্যেককে

২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-২ আদালতের মাননীয় বিচারক

উৎপল ভট্টাচার্য্য এই রায় ঘোষণা করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মামুনুর রশিদ রায়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত রিতা খাতুন হরিণাকুন্ডুর কেষ্টপুর গ্রামের জয়নাল মন্ডলের মেয়ে, এবং তার প্রেমিক আব্দুল

মালেক একই উপজেলার ভালকী গ্রামের জালাল মন্ডলের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে গোপন

পরকীয়ার সম্পর্ক চলছিল বলে মামলার নথিতে উল্লেখ রয়েছে।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৭ নভেম্বর রাতের কোনো এক সময় অভিযুক্ত রিতা ও

মালেক মিলে রিতার স্বামী জসিম উদ্দিনকে

পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে বাড়ির পাশে ডেকে নেয়। পরে চেতনানাশক খাইয়ে অচেতন করে তাকে হত্যা করা হয়।

পরদিন নিহতের ভাই আব্দুর রশিদ বাদী হয়ে

হরিণাকুন্ডু থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পান এসআই অনিশ মন্ডল, যিনি

পরবর্তীতে সুষ্ঠু তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন, যাদের জবানবন্দি এবং উপস্থাপিত প্রমাণের

ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন।

বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম, এ্যাডভোকেট নেকবার

এ্যাডভোকেট রিমা ইয়াসমিন। অপরদিকে

আসামীদের পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেনএ্যাডভোকেট গৌতম কুমার

রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী ও নিহতের ভাই আব্দুর রশিদ বলেন,আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা

করা হয়েছে। রিতা খাতুন ও তার পরকীয়া প্রেমিক আব্দুল মালেক মিলে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড

ঘটিয়েছে, আমরা তা আদালতে প্রমাণ করতে

পেরেছি। যদিও তারা যাবজ্জীবন পেয়েছে, তবে ফাঁসি হলে আমরা আরও বেশি খুশি হতাম।

এ রায়কে কেন্দ্র করে হরিণাকুন্ডু এবং আশপাশের এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে

আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যা ভবিষ্যতে অন্যদের জন্য সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *