আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার সাতগাছি গ্রামে সমকামী সম্পর্কের জেরে দুই নারীকে আটক করেছে
পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে, ওই নারীদের একজন—গাইবান্ধার বাসিন্দা—প্রেমের টানে ছুটে এসেছে
সাতগাছির চার সন্তানের জননী এক নারীর কাছে। এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতগাছি গ্রামের সৌদি প্রবাসী এক ব্যক্তির স্ত্রী কল্পনা খাতুন (৩৫)
বিগত কিছুদিন ধরে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর
থানার নুনারী গ্রামের এক নারী (২৫)-এর সঙ্গে গোপন প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
উভয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগ চলছিল।
একপর্যায়ে ওই নারী কল্পনা খাতুনের বাড়িতে চলে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার এক বান্ধবী আখি (২৪),
যিনি পুরুষ সেজে চলাফেরা করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে কল্পনা খাতুনের বাড়ি ঘেরাও করেন এবং দুই
অতিথি নারীর পরিচয় জানতে চান। পরে পুলিশকে খবর দিলে শৈলকুপা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনজনকেই থানায় নিয়ে আসে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গাইবান্ধা থেকে আসা নারী ও কল্পনা খাতুন স্বীকার করেন, তারা একে অপরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িত।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি খুবই
সংবেদনশীল। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকেই থানায় আনা হয়েছে।
আইনগত দিক বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এদিকে, কল্পনা খাতুনের পরিবার ও প্রতিবেশীরা এমন ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। কল্পনার এক আত্মীয়
বলেন, “আমরা এমন কিছু কল্পনাও করিনি। ওর তো স্বামী-সন্তান আছে।
এখন সামাজিকভাবে মুখ দেখানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে
সংবেদনশীলতা বজায় রেখে তদন্ত ও পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। তবে এই ঘটনায় স্থানীয় সমাজে
সমকামিতা নিয়ে আলোচনা ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমলিঙ্গের যৌন সম্পর্ক শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত
হলেও, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ধরনের ধারাকে যুগোপযোগী নয় বলে মত দিয়ে
আসছে।ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার প্রকৃত তথ্য নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে।