আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের গুড়পাড়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ার প্রধান
সড়কটির বেহাল দশা এখন জনদুর্ভোগের চরম রূপ নিয়েছে। চলমান বর্ষা মৌসুমে কাঁচা এই রাস্তাটি কাদা
ও গর্তে ভরে গেছে। জলাবদ্ধতা ও কর্দমাক্ত অবস্থায় রাস্তাটি এখন কার্যত চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে শত শত মানুষ চলাচল করেন, যার মধ্যে রয়েছে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া
শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, কৃষক এবং অসুস্থ রোগী। অথচ প্রায় ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি এখনো পাকা
হয়নি। বর্ষার সময়ে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে, একটু বৃষ্টিতেই রাস্তা পরিণত হয় কাদার রাজ্যে।
এই সড়কের দুই পাশে রয়েছে দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—সিসিএস কিন্ডার গার্টেন (৫০০ জন শিক্ষার্থী) ও একটি শিশু মাদ্রাসা (প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী)।
প্রতিদিন কোমলমতি শিশুরা কাদায় ভিজে,
জামাকাপড় ময়লা করে এবং বই-খাতা নষ্ট করে স্কুলে যাতায়াত করছে। অভিভাবকদের অভিযোগ,
এই দুরবস্থায় শিশুদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটির উন্নয়নের বিষয়ে বহুবার ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু এখনো স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় চাকরিজীবী আবুল হোসেন বলেন,আমরা লুঙ্গি পরে বাড়ি থেকে বের হই, রাস্তায় কাদা পার হয়ে
পরিষ্কার জামা-প্যান্ট পরে অফিসে যাই। এটা কেমন অবস্থা বলেন?”
এলাকার আরও বাসিন্দারা জানান, রাস্তায় এত বেশি কাদা যে অনেকে বাজারে যেতেও পারেন না। রোগী পরিবহন ও অন্যান্য জরুরি কাজেও চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,প্রতি বছর টিআর-কাবিখা ও কর্মসৃজন প্রকল্পের মাধ্যমে রাস্তায়
মাটি ফেলা হয়। চলাচলের উপযোগী রাখতে আমরা চেষ্টা করছি। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য রাস্তাটি পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রাস্তাটির বেহাল দশা দেখে হতবাক হচ্ছেন বাইরের মানুষজনও। কোটচাঁদপুরের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলার একটি জনবহুল গ্রামের প্রধান সড়ক
এখনও কাঁচা থেকে যাওয়াকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার চরম ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা।
এখন সময় এসেছে জনস্বার্থে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির টেকসই ও স্থায়ী উন্নয়ন নিশ্চিত করার। এলাকার
মানুষ চান দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে রাস্তা পাকাকরণ করা হোক, যেন দুর্ভোগের অবসান ঘটে।