পিতা-পুত্রের মধ্যে রাগারাগি, মাথায় কাঁচি ঢুকে ছেলের অবস্থা সংকটাপন্ন অপারেশনে দেড় লাখ টাকা প্রয়োজন, জীবন ঝুঁকিতে

আবু সাইদ শওকত আলী, বিশেষ প্রতিনিধি:-

কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ধলনগর গ্রামে ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ও

মর্মান্তিক পারিবারিক দুর্ঘটনা। সামান্য পারিবারিক

বিষয় নিয়ে পিতা-পুত্রের বাকবিতণ্ডা মুহূর্তেই রূপ নেয় রাগান্বিত আচরণে, যার পরিণতিতে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে এক তরুণ।

জানা গেছে, ধলনগর গ্রামের বাসিন্দা শাহিন নামের এক ব্যক্তি তুচ্ছ একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে তার

কিশোর ছেলের (১৫) সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে তিনি হাতের কাছে থাকা একটি কাঁচি ছুঁড়ে মারেন ছেলের দিকে।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে কাঁচিটি ছেলের মাথায় বিদ্ধ হয় এবং তা মাথার ভেতরে গেঁথে যায়।

গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান। ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়ার

পর অবশেষে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল)-এ।

বর্তমানে ওই কিশোর আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছে এবং তার মাথায় এখনো কাঁচিটি অবস্থান করছে।

চিকিৎসকদের মতে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং অপারেশনটি অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ। অপারেশন

সম্পন্ন করতে প্রায় ১.৫ লক্ষ টাকার প্রয়োজন, যা পরিবারের পক্ষে মেটানো অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

এদিকে পিতা শাহিন ঘটনার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

ছেলের প্রতি নিজের রাগের প্রতিক্রিয়ায় যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা উপলব্ধি করে এখন নিজেই

কাঁদছেন, দৌড়াচ্ছেন, ছেলের সুস্থতার জন্য সাহায্যের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীরা জানান, ঘটনাটি নিঃসন্দেহে দুর্ঘটনাবশত ঘটেছে।

তবে এমন দুর্ঘটনা আমাদের সকলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকল। রাগ মুহূর্তেই একটি

জীবনকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

এ বিষয়ে সমাজসচেতন মহল ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন এ ঘটনা আমাদের শেখায়,পারিবারিক

সম্পর্কের মধ্যে ধৈর্য ও সংযম বজায় রাখা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এক মুহূর্তের রাগ দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।

অসুস্থ কিশোরের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা পেতে স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে

আসার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *