আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
গোপালগঞ্জ জেলায় চলমান৷ উত্তপ্ত পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারফিউ জারি
করা হয়েছে। জনসাধারণের নিরাপত্তা ও শান্তি-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী, বিজিবি
এবং কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী মাঠে কাজ করছে। বিশেষ করে কোস্ট গার্ডের সক্রিয় অংশগ্রহণ
স্থানীয়দের মধ্যে আস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।
সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জে সম্প্রতি সংঘটিত কয়েকটি রাজনৈতিক সহিংসতা ও জনসম্পৃক্ত ঘটনার
প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। সেই প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে কারফিউ
জারি করে এবং সকল ধরনের জমায়েত ও সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যৌথ বাহিনী মোতায়েনের।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, “দেশের সার্বভৌমত্ব ও জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায়
কোস্ট গার্ড সর্বদা প্রস্তুত। গোপালগঞ্জের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে
অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করছে আমাদের সদস্যরা।
কোস্ট গার্ডের সদস্যরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে টহল জোরদার করেছে এবং
জনগণের চলাচল পর্যবেক্ষণে সতর্ক রয়েছে। নিরীহ জনসাধারণ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে দিকেও
রাখা হচ্ছে নজর। একই সঙ্গে গুজব ও অপপ্রচার ঠেকাতে ডিজিটাল নজরদারিও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জের সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, “আমরা চাই জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে
ঘরে থাকুক এবং সরকারি নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করুক। কোনো গুজবে কান দেবেন না
এবং যেকোনো ধরনের সন্দেহজনক কার্যকলাপ চোখে পড়লে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এদিকে, গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেমন – বঙ্গবন্ধু চত্বর, শেখ ফজলুল হক মণি
মেমোরিয়াল, ভাটিয়াপাড়া, কাশিয়ানী ও টুঙ্গিপাড়া এলাকায়ও কোস্ট গার্ডের টহল চলছে।
পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে অভিযানও পরিচালনা করছে বাহিনীটি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত কারফিউ বহাল
থাকবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ টহল অব্যাহত থাকবে।
গোপালগঞ্জের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “বাহিনীর এই কঠোর অবস্থানের ফলে আমরা আশ্বস্ত বোধ করছি। আশা করি, অচিরেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”
বর্তমানে গোপালগঞ্জে আতঙ্ক ও উদ্বেগ থাকলেও কোস্ট গার্ড ও অন্যান্য বাহিনীর উপস্থিতি সাধারণ
জনগণের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য
প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানো হচ্ছে এবং গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিটও।
উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জের এই পরিস্থিতি সারাদেশেই নজর কেড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সমন্বিত প্রয়াস দেশব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছে।