গোপালগঞ্জে সহিংসতায় ৪৫ পুলিশ সদস্য ও একাধিক সাংবাদিক আহত, পুরো দেশজুড়ে আতঙ্ক

আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সহিংসতায় অন্তত

৪৫ জন পুলিশ সদস্য এবং একাধিক গণমাধ্যমকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দেশজুড়ে চরম আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ে পুলিশের জমা দেওয়া একটি বিস্তারিত প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সহিংস ঘটনার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে

শান্তিপূর্ণভাবে জনতাকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অনুরোধ

উপেক্ষা করে ইট-পাটকেল ছোড়ে এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই নয়; বরং এনসিপির নেতা-কর্মীরাও এই সহিংসতার শিকার হন।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, সহিংস বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জ জেলা কারাগার,

স্থানীয় প্রশাসনিক ভবনসহ একাধিক সরকারি স্থাপনাতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায়। এতে সরকারি সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এই সহিংস ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

আহত হয়েছেন ৪৫ জন পুলিশ সদস্যসহ বহু সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিক। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের

অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, বর্তমানে গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়

ও সরকারি ভবনের সামনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকায় ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতা

ফিরে এলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

গোপালগঞ্জে সংঘটিত এই সহিংসতা নিয়ে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে রীতিমতো রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সহিংসতা উসকে দেওয়া ও হামলায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের

সনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *