ঝিনাইদহে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সভাপতির গুলি করে হত্যার হুমকি, অডিও ভাইরাল

গঞ্জেরখবর ডেস্ক:

ঝিনাইদহে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মোঃ শিমুল হোসেনকে গুলি

করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের পলাতক সভাপতি সজিব

হোসেন। এ ঘটনার একটি ভয়েস কলের অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি

(জিডি নং ১০৩৭) করেছেন শিমুল হোসেন। তিনি শহরের ২নং পানির ট্যাংকি পাড়ায় “শিমুল মিডিয়া”

নামে একটি ডিজিটাল মিডিয়া ও ভিডিও এডিটিং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন অ্যাক্টিভিজমের সঙ্গে যুক্ত আছেন।

জিডি ও শিমুলের বর্ণনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে তিনি তার অফিসে বসে কাজ

করছিলেন। এ সময় ফেসবুকে একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের

অস্ত্র ও লাঠি হাতে মিছিল করার দৃশ্য দেখা যায়।

এর কিছুক্ষণ পরই তার ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল করেন ছাত্রলীগের বিতর্কিত নেতা সজিব হোসেন।

তিনি শিমুলকে ভিডিও শেয়ারের কারণ জানতে চেয়ে বলেন, “এই ভিডিও তুই কেন শেয়ার করছিস?”

উত্তরে শিমুল জানান, “ভিডিও তো অনেকে শেয়ার করছে, আমি করলে দোষ কী?”

জবাবে সজিব বলেন, “সবাই করুক, তুই করবি ক্যা?”

এরপর হুমকির সুরে সজিব বলেন:“জুলাই তো আরো আসবে, সামনের জুলাই তুই কই থাকবি?

তোর চোখে গুলি করে তোকে হত্যা করা হবে।”

এই ভয়ঙ্কর হুমকির অডিও ক্লিপ রাতেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঝিনাইদহে ‘জুলাই আন্দোলন’

কেন্দ্র করে যে সকল ছাত্রনেতা ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন, তাদের

মধ্যে এই হুমকির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

সজিব হোসেন, ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে বিবেচিত) সাবেক সভাপতি।

তিনি শৈলকুপা উপজেলার কদমতলা গ্রামের বাসিন্দা। বিভিন্ন সহিংসতা ও রাজনৈতিক অপরাধে

সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন

বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিকদের বলেন,
“বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া

হয়েছে। সদর থানার এসআই মনোজ কুমারকে দ্রুত তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

উল্লেখ্য, হুমকির শিকার মোঃ শিমুল হোসেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তথ্য ও ভিডিও প্রমাণ সংগ্রহে

গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার স্ত্রী এলমা খাতুন ওই আন্দোলনের একটি কেন্দ্রীয় মুখ ছিলেন, যিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনের সাহসী নেতৃত্ব দেন।

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

রাজনৈতিক হুমকি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *