আন্তর্জাতিক ডেস্ক:-
দক্ষিণ লেবাননে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ফের হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। শনিবার (২৬
জুলাই) দিনের বিভিন্ন সময় চালানো ড্রোন ও বিমান হামলায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন বলে
জানিয়েছে লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, দক্ষিণ লেবাননের টাইর (টায়ার) জেলায় একটি বেসামরিক
যানবাহন লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় একজন নিহত হন। একই জেলায় দেবাল শহরে আরও একটি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন।
লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, দেবাল শহরের একটি বাড়িকে লক্ষ্য করে চালানো হয় দ্বিতীয় হামলাটি।
ইসরায়েলি বাহিনীর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তাদের হামলার লক্ষ্য ছিল হিজবুল্লাহ জঙ্গি ঘাঁটি ও
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ইসরায়েলের সামরিক মুখপাত্রের ভাষ্য, সীমান্তবর্তী বিন্ত জাবেইল এলাকায় ‘সন্ত্রাসী
সংগঠন পুনর্গঠনের প্রচেষ্টায় জড়িত’ এক হিজবুল্লাহ কমান্ডারকে তারা হত্যা করেছে। তবে এই হামলা ঠিক
কোথায় সংঘটিত হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে জানায়নি তেল আবিব।
উল্লেখ্য, এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সীমান্ত সংঘাতের অবসানে ২০২৪ সালের নভেম্বরে একটি
যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তির আওতায় হিজবুল্লাহকে ইসরায়েল সীমান্ত থেকে অন্তত ৩০
কিলোমিটার উত্তরে লিতানি নদীর ওপারে সরিয়ে নেওয়া এবং ওই অঞ্চলে লেবাননের সেনাবাহিনী
ওজাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব পালনের কথা বলা হয়।
একইভাবে ইসরায়েলকেও দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি কৌশলগত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা
ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেল আবিব সেসব এলাকা থেকে সেনা সরায়নি, বরং পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
ইসরায়েল জানিয়েছে, ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহকে পুরোপুরি নিরস্ত্র না করা পর্যন্ত তারা হামলা অব্যাহত রাখবে।
এভাবে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বারবার লঙ্ঘিত হওয়ায় ওই অঞ্চলে নতুন করে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা
তৈরি হয়েছে। দক্ষিণ লেবাননের বেসামরিক জনগণ ক্রমাগত নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বিশেষ করে
সীমান্তবর্তী অঞ্চলে নাগরিকদের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হলে
লেবাননের ভঙ্গুর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিতে পারে।