বিশেষ প্রতিনিধি:-
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, ভজঘটভাবে দেশ চলছে। জনগণ
নিশ্চিত নয়—কে আসলে দেশ পরিচালনা করছে। সরকারের ভেতর আরেকটি অদৃশ্য সরকার আছে,
যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে দাবি করেন তিনি।
শনিবার বিকেলে জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারও
আটক নেতাদের মুক্তির দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
জিএম কাদের বলেন,সরকারের ভেতরে কয়েকটি দলীয় গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। কেউ কেউ সরকারি
দলের বাইরে থেকেও সরকারিভাবে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে। অথচ দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ
সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরোধী। বিরোধী কণ্ঠস্বরকে দমন করতে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, সাবেক সরকার যেমন জাতীয় পার্টিকে বিভক্ত করার ষড়যন্ত্র করেছিল, বর্তমান
সরকারও একই কৌশল অনুসরণ করছে। জাপার সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু ও মোহাম্মদপুর থানা জাপা নেতা সেলিম প্রায় এক বছর ধরে
কারাগারে রয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আইনি প্রক্রিয়া জানলেও তাদের জামিন দেওয়া হচ্ছে না।
জিএম কাদের বলেন,ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের পর যেভাবে ‘ইনকিলাব’ বা পরিবর্তনের কথা বলা
হয়েছিল, বাস্তবে তার কিছুই ঘটেনি। বরং নতুনভাবে ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়েছে। দেশের প্রশাসন, বিচার
বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের সক্ষমতা বর্তমান সরকারের নেই।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “যদি শুধু তথাকথিত সরকারপন্থী দলগুলোকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়, তবে
এ নির্বাচন কীভাবে অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে? পুলিশ-আর্মির প্রটেকশনে কিছু দলকে সুবিধা দেওয়া হলে তা জনমতের প্রতিফলন ঘটাবে না।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ এখন সরকারবিরোধী।
তারা মনে করছে বর্তমান অবস্থার চেয়ে শেখ হাসিনার আমল তুলনামূলকভাবে ভালো ছিল।
তাহলে কি কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের আত্মত্যাগ বিফল হলো? সংগ্রাম শেষ হয়নি, ইনকিলাবও শেষ হয়নি।
তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে দেশে গণতন্ত্র টিকবে না, স্থিতিশীলতাও ফিরবে না।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন জাপা মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী,
কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ,
সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় পার্টি কার্যালয়
থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।