জীবননগরে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণার চেষ্টা অল্পের জন্য রক্ষা পেল ভুক্তভোগী

জীবননগর অফিস:

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে ভুয়া পুলিশ পরিচয়ে  মোবাইল  ফোনের  মাধ্যমে প্রতারণার  চেষ্টা  চালিয়েছে  একটি  অজ্ঞাত চক্র। ভাগ্যক্রমে সময়মতো পরিবারের সতর্কতার কারণে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন এক শিক্ষক পরিবার।

জীবননগর পৌর এলাকার টিএ্যান্ডটি পাড়ার আবুল বাসারের ছেলে তানজীর আহম্মেদ(২৫) লিখিত অভিযোগে জানান,গত বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে জীবননগর বাজারে

যান। এ সময় অজ্ঞাত পরিচয়ের এক ব্যক্তি নিজেকে জীবননগর থানার এসআই পরিচয় দিয়ে তার পিতা আবুল বাসারের মোবাইল নম্বর (০১৭১২-৯৭১৩২২) এ কল করে জানান,আপনার ছেলে দুই বন্ধুর সাথে ছিল, যাদের

নিকট থেকে মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। আপনার ছেলেকেও সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। ৫০ হাজার টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। টাকা পাঠাতে হবে আমাদের ওসি স্যারের বিকাশ নম্বরে (০১৬২৭-৩৩২৯৩৯)।

হঠাৎ ছেলের বিপদের খবর শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জীবননগর মিনাজপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাসার।তিনি জানান,প্রতারক ব্যক্তি এমনভাবে কথা বলেছিল যে আমি মুহূর্তের মধ্যে হন্তদন্ত

হয়ে টাকা পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক সেই সময় আমার ছেলে বাসায় ফিরে আসে। তাকে সামনে দেখে আমি হতবাক হয়ে যাই এবং তখনই বুঝতে পারি প্রতারকের ফাঁদে পা দিতে যাচ্ছিলাম।

তানজীর আহম্মেদ বাড়িতে ফেরার পর বিষয়টি পরিষ্কার হয় যে পুরো ঘটনাটি ছিল একটি প্রতারণার ফাঁদ। পরবর্তীতে প্রতারকদের ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা কল রিসিভ করলেও কোনো কথা না বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

এ বিষয়ে জীবননগর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন,প্রায় এক বছর আগে আমিও একই ধরনের প্রতারণার শিকার হতে যাচ্ছিলাম। ভাগ্যক্রমে শেষ মুহূর্তে টের পেয়ে বেঁচে যাই। এসব প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়।

জীবননগর থানার  অফিসার  ইনচার্জ (ওসি) মামুন  হোসেন বিশ্বাস  এ প্রসঙ্গে  বলেন,ঘটনার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনায় কেউ আতঙ্কিত হবেন না।

পুলিশের কোনো সদস্য সাধারণ নাগরিককে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করতে পারে না, করবেও না। এমন ফোন এলে সাথে সাথে থানায় জানানোর জন্য আহবান করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, প্রতারণার শিকার না হওয়ার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। অচেনা নম্বর থেকে কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে টাকা দাবি করে, তবে দ্রুত স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করার আহ্বান জানান তিনি।

 স্থানীয় সচেতন মহলের মতে, প্রতারক চক্র আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিশেষ করে সন্তানদের বিপদে ফেলার নাটক সাজিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।

এ ধরনের প্রতারণা রোধে পুলিশি নজরদারির পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *