তিন সাংবাদিক হেনস্থার শিকার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের নিন্দা ,জেলা ব্যাপি সংবাদে তোলপাড়

আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-

স্কুলের অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকূপায় লাঞ্ছিত হয়েছেন তিন

সাংবাদিক। এসময় ওই তিন সাংবাদিককে দেখে

নেয়ার হুমকি দিয়ে শাসিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন।

অভিযুক্ত এনায়েত হোসেন শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের স্বামী।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল বেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।

লঞ্চিত সাংবাদিকরা হলেন বাংলাদেশ পোস্টের

রোভিং করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার কবীর, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি এম বুরহান উদ্দীন

ও ভোরের আকাশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজন বিপ্লব।

ভুক্তভোগী সংবাদকর্মী জানান, শৈলকূপা ১৮নং

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ বাবদ টাকা আদায় করার খবর

পেয়ে ওই তিন বিদ্যালয়ে যান। তারা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ও সহকারী শিক্ষকদের সঙ্গে কথা

বলে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ থেকে বের হচ্ছিলেন। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌছান বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত

প্রধান শিক্ষকের স্বামী আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন।

তিনি ওই তিন সংবাদিক কেন বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিচ্ছেন এমন কথা বলে প্রথমে গালিগালাজ ও পরে

মারতে উদ্যত হন। আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের এমন উদ্ধ্যত আচরণে সাংবাদিকরা কিংকর্তব্যবিমূড়

হয়ে ঘটনাস্থ্য ত্যাগ করতে চাইলে আবারো আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেন তাদের গতিরোধ করে দেখে নেয়ার হুমকি দেন।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপা পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি থাকাকালীন এনায়েত হোসেন

টেন্ডারবাজি, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন। রাজনৈতিক ভাবেও বহু মানুষকে তিনি হয়রানি

করেছেন। তিনি ছিলেন শৈলকুপার আতংক।

জেলার সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার কবীর বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহের জন্য তথ্যগ্রহণ শেষে বিদ্যালয়টির

অফিসকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত হোসেন এসে আমাদের উপর

চড়াও হন। এসময় তিনি হুমকি দিয়ে ‘কেনো সংবাদ সংগ্রহের জন্য তার স্ত্রীর স্কুলে গিয়েছি’ তার জবাব

চান। এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে ‘দেখে নেয়া হবে’ বলে হুমকি দেন।’

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী জানান, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। সেসময় প্রধান শিক্ষকের স্বামী

এনায়েত হোসেন এসে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন।’

কথা বলতে আ’লীগ নেতা এনায়েত হোসেনের মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করননি। 

তবে তার স্ত্রী ওই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ঘটনার সত্যতা

স্বীকার করে বলেন, ‘তিন সাংবাদিক বিদ্যালয়ে এসে তথ্য নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন অনাকাংক্ষিত

ঘটনাটি ঘটেছে। তারা সকলেই একে অপরের পূর্ব পরিচিত। তার স্বামী সম্পর্কের খাতিরে এমন ব্যবহার করেছে হয়তো।

এ বিষয়ে শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা

(ইউএনও) স্নিগ্ধা দাস বলেন, সাংবাদিকদের কাজে

বাঁধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি অবগত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হবে।

এদিকে সাংবাদিকদের কাজে বাধা ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি

দিয়েছেন ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি আসিফ কাজল ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লিটন।

এ ছাড়াও ঘটনার ব্যাপারে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দৈনিক গঞ্জেরখবর পরিবার। তারা

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি

জানিয়ে উল্লেখ করেছেন এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে অবাধ তথ্য প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হবে।

  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *