জীবননগর অফিস:
জীবননগর উপজেলার হাসাদহ বাজারপাড়ার আলমসাধু চালক রাসেল হোসেন(২৬) কাঠ ভর্তি আলমসাধু গাড়ী ঝিনাইদহের গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর সড়কে উল্টে গিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হওয়ার কয়েক ঘন্টার
মাথায় মারা যান। ঘটনাটি শনিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে সংঘটিত হয়েছে।। রাসেল হোসেন এক সন্তানের জনক ছিলেন। তার মৃত্যুতে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এবং শোকের মাতম চলছে পরিবার জুঁড়ে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রাসেল হোসেন পেশায় স্যালো মেশিনের মিস্ত্রি ছিলেন। তবে জীবিকার তাগিদে
শ্যালো মেশিন মিস্ত্রি পেশা ছেড়ে গত এক বছর ধরে আলমসাধু গাড়ী চালিয়ে আসছিলেন এবং হাসাদহ বাজার থেকে বিভিন্ন কাঠ ব্যবসায়ীর কাঠ আলমসাধু গাড়ী ভর্তি করে ঝিনাইদহের বিভিন্ন স্থানে পৌছে দিতেন। তিনি
প্রতিদিনের মত শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে আলমসাধুতে কাঠ বোঝাই করে ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর বাজারের নিকটবর্তী সড়কের ভাঙ্গাচোরা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তার আলমসাধুটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে স্টিয়ারিং (হ্যান্ডেল) রাসেলের বুকে আঘাত করলে তিনি
মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বড় ভাই আরিফ মন্ডল জানান,আমার ছোট ভাই রাসেল হোসেন খুব পরিশ্রমী ছিল। ছোট একটি
সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতো। জীবিকার তাগিদেই আলমসাধু চালাতো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে সেই গাড়িই আজ তার জীবন কেড়ে নিল। রাসেল হোসেন এলাকার মানুষের কাছে ভাল মানুষ হিসাবে পরিচিত ছিল।
মৃত্যুর সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে হাসাদাহসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে শোকের ছায়া নেমে আসে। অসংখ্য স্বজন, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী শেষ বারের মতো রাসেলকে দেখতে তার বাড়িতে ভিড় জমান।
পরদিন রোববার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে জানাজা শেষে রাসেলের দাফন সম্পন্ন করা হয়। জানাজায় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, আত্মীয়স্বজন ও অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এসময় শোকাহত এলাকাবাসী বলেন,রাসেল খুব শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। তার এমন অকাল মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছে না।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, চন্ডিপুর বাজার এলাকার সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় থাকলেও মেরামতের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ওই সড়কের গর্তের কারণেই প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে তারা জানান।
এদিকে রাসেলের মৃত্যুতে হাসাদাহ ও আশপাশের এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার পরিবার এখনো গভীর শোক ও বেদনায় মুহ্যমান।