জীবননগরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গ্রাহক হয়রানির অভিযোগ মানববন্ধনের প্রস্তুতি

জীবননগর অফিস:-মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতাধীনজীবননগর জোনাল অফিসের ভারপ্রাপ্ত সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) হাফিজুল

ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা এবং অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় শত শত

গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, এজিএম হাফিজুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি পল্লী বিদ্যুতের

গ্রাহকদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছেন  এবং নিজেদের খেয়ালখুশি অনুযায়ী নতুন নতুন নিয়ম চাপিয়ে দিচ্ছেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, নতুন মিটার সংযোগ নিতে গিয়ে গ্রাহকদের চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, বসতবাড়ির মালিকানার

কাগজপত্র ও পর্চা থাকলেই সংযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, হাফিজুল ইসলাম ব্যক্তিগত

সিদ্ধান্তে নতুন নিয়ম তৈরি করে অনলাইনে হালনাগাদ পর্চা জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছেন।

এমনকি, জমির পর্চা নিজের নামে না থাকলে আবেদন বাতিল করে দেয়া হচ্ছে।

রোববার  দুপুরে  আমাদের এলাকার ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি আমরা বারবার জানালেও এজিএম

সাহেব গুরুত্ব দেননি। রাত পর্যন্ত পুরো গ্রাম অন্ধকারে ছিল।

পরে জিএম সাহেবের হস্তক্ষেপে সোমবার সকালে ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা

নিয়ে গেলে এজিএম গ্রাহকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং সমাধানের বদলে নানা অজুহাত দেন।জীবননগর

শহরের বাসিন্দা আনিসুর রহমান শিপলুবলেন,সোলার প্লান্টের সংযোগ নিতে গিয়ে আমাকে দেড় মাস

অপেক্ষা করতে হয়েছে, যদিও আমি সব শর্ত পূরণ করেছিলাম। প্রতিবার গেলে নতুন নতুন অজুহাত

দেখানো হয়েছে। অভিযোগে আরও জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রেই মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও গ্রাহকরা নতুন সংযোগ পাচ্ছেন না, অথচ কেউ

‘বিশেষ সুবিধা’ দিলে দ্রুত সংযোগ দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রাহক এবং অফিসের

কয়েকজন কর্মচারী জানান,এজিএম-এস্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ করলে কর্মচারীরাও হয়রানির শিকার হন।

অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, প্রতাপপুরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাহকরা এখন এজিএম হাফিজুল ইসলামের অপসারণ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে

মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারাও অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন।

বাঁকা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা ও সাবেক মেম্বার আব্দুল মান্নান মণ্ডল বলেন,
এই অফিসে মানুষের কোনো কথা শোনার কেউ নেই। এজিএম আমাদের মানুষ বলেই মনে করেন না। এমন

কর্মকর্তার কাছে মানুষ কীভাবে সেবা আশা করবে?

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে এজিএম হাফিজুল ইসলাম বলেন,প্রতাপপুরের ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়ার

বিষয়টি আমি রাতেই জেনেছি। অফিসে ট্রান্সফরমার না থাকায় তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া যায়নি।সোমবার সকালে সেটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

অন্যদিকে জীবননগর জোনাল অফিসের ডিজিএম (ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার) আব্দুল মাজেদ বলেন,

হাফিজুল ইসলাম কম কথা বলেন, কিন্তু কাজ জানেন। আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে কোনো আর্থিক

দুর্নীতির অভিযোগ নেই। নিয়মের বাইরে কাজ করতে
না চাওয়ায় অনেকে হয়ত অসন্তুষ্ট। তবে তার বিরুদ্ধে গ্রাহকদের মানববন্ধনের কোনো খবর আমার জানা নেই।

জীবননগর অঞ্চলের সচেতন নাগরিক সমাজ মনে করছেন, একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা যদি জনগণের ভোগান্তির কারণ হন, তাহলে বিষয়টিকে

হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। তারা দাবি করছেন, স্থানীয় প্রশাসন ও পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ যেন

অভযোগগুলোর নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *