বিশেষ প্রতিবেদক:
‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার
(২৬ জুন) ঝিনাইদহে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়েছে। ‘মাদক নয়, জীবন হোক
আলোকিত’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিনের শুরুতে সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের
করা হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়।
র্যালিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর,
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, এনজিও প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা
অংশগ্রহণ করেন। ব্যানার-ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও স্লোগানে মুখরিত ছিল র্যালিটি।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
এতে সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ. বি. এম. খালিদ হোসেন সিদ্দিকী।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল।
তিনি বলেন, “মাদক একটি পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্য ভয়াবহ অভিশাপ। তরুণ সমাজকে রক্ষা
করতে হলে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
প্রশাসন, শিক্ষক, অভিভাবক, সমাজপতি ও তরুণ সমাজ সবাইকে সচেতন হতে হবে। শুধু আইন প্রয়োগ করলেই হবে না, সামাজিক সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ, সিভিল সার্জন ডা. মোঃ
কামরুজ্জামান এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক গোলক মজুমদার।
বক্তারা মাদকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে বলেন, “মাদকের ছোবলে যুবসমাজ ধ্বংসের মুখে।
এ থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হচ্ছে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করা এবং যুবকদের খেলাধুলা ও সৃজনশীল কাজে যুক্ত করা।”
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন ও
রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ এবং মাদকবিরোধী শপথ অনুষ্ঠানও অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর রুহুল আমীন।
দিবসটি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পোস্টারিং ও লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রমও পরিচালনা করা হয়।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাদক বিরোধী বার্তা সংবলিত ফেস্টুন শহরের বিভিন্ন স্থানে টানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী,
সাংবাদিক, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় দুই শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।