আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে পূর্ব বন
বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী এলাকায় হরিণ শিকারকালে এক শিকারিকে আটক করেছে
বনবিভাগ।সোমবার (৩০ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কচিখালীর সুখপাড়া খাল সংলগ্ন গহীন অরণ্যে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তির নাম আরিফুল ইসলাম দুলাল (৩৫),
তিনি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কোরাইল্যা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
অভিযানে বন বিভাগের টহল দল তার কাছ থেকে হরিণ শিকারে ব্যবহৃত ৩০০টি মালা ফাঁদ, একটি ছুরি,
একটি করাত, ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের প্লাস্টিকের রশি ও আরও কিছু শিকারি সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
তবে অভিযানের সময় দুলালের সঙ্গে থাকা আরও দুইজন শিকারি বন বিভাগের উপস্থিতি টের পেয়ে
গহীন বনের ভেতর পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তাদের শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বলেন,সুন্দরবনে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমরা সব সময় তৎপর। হরিণ শিকার একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আটককৃত দুলালের বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
পালিয়ে যাওয়া বাকি শিকারিদেরও শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও জানান, শিকারিদের স্থাপন করা ফাঁদগুলো দিয়ে একাধিক
হরিণ ধরা সম্ভব, যা সুন্দরবনের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই প্রতিটি ফাঁদ জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে।
সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল অবৈধ শিকারিদের
দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ্যবস্তু হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বন বিভাগের টহল ও নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করা
হয়েছে। এর ফলে হরিণ শিকার ও বনজ সম্পদ লুট পাটের ঘটনা অনেকাংশেই কমেছে।
এ ঘটনার পর স্থানীয় পরিবেশবাদীরা বন বিভাগের এই
অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন, যাতে
করে বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য টিকে থাকে অক্ষুণ্ণভাবে।
প্রসঙ্গত, হরিণ শিকার বা বন্যপ্রাণী হত্যা ও পাচার বন আইনের আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ।
এই অপরাধে জড়িতদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সুন্দরবনে হরিণ শিকারের মতো ঘটনায় বন বিভাগের
তৎপরতা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নতুন বার্তা দিচ্ছে, যা দেশের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।