কুমারখালীতে এক সাথে দুই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা সেই শিক্ষক মুসাকে শোকজ

বিশেষ  প্রতিনিধি:
একইসঙ্গে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা উত্তোলনের অভিযোগে কুষ্টিয়ার

কুমারখালী উপজেলার শিক্ষক মোহাম্মদ মুসা করিমকে শোকজ করেছে উপজেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, বুধবার (২ জুলাই) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক

স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর (শোকজ) চিঠি শিক্ষক মুসার ঠিকানায় পাঠানো হয়। চিঠিতে তিন

কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে— কেন তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।

কী অভিযোগ তার বিরুদ্ধে?

মুসা করিম বর্তমানে কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

হিসেবে কর্মরত। বিদ্যালয়টি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং চাপড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। অথচ চাকরি না

ছেড়েই তিনি আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান— একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

সেখানে নিয়মিত ক্লাস না নেওয়ার পরও প্রতিষ্ঠান দু’টি থেকেই তিনি বেতন-ভাতা তুলেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই এক নারীকে অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা

অধিদপ্তরের BANBEIS (বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো) পোর্টালে তথ্য পাঠান তিনি। যা স্পষ্টভাবে প্রশাসনিক বিধিমালার চরম লঙ্ঘন।

গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ

ঘটনাটি প্রথম সামনে আসে মঙ্গলবার (১ জুলাই) জাগো নিউজে প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল— ‘একসঙ্গে বিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষক, বেতন-ভাতাও তুলেছেন মুসা’। ওই

প্রতিবেদনে বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণসহ প্রকাশ করা হয় মুসার বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগ।

প্রশাসনের অবস্থান

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক বলেন, “গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য ও প্রাথমিক

অনুসন্ধানে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনি

সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে বিধি মোতাবেক পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনার পর স্থানীয় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এমন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষাক্ষেত্রে এমন অনিয়ম ও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে

হতাশ স্থানীয়রা বলছেন— একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের অপেশাদার আচরণ কাম্য নয়।

তদন্ত ও আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত বিষয়টি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *