আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:-
কুষ্টিয়ায় ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘কটূক্তি’পূর্ণ মন্তব্য করায় ট্রাফিক
পুলিশের এক সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম ফারজুল
ইসলাম রনি। তিনি কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন।
শনিবার (৫ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিকেলে ফারজুল ইসলাম রনি তার ব্যক্তিগত
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে জুলাই বিপ্লব নিয়ে ‘অপমানজনক ও বিতর্কিত’ একটি স্ট্যাটাস দেন।
পোস্টটি দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। বিশেষ
করে শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা ফারজুল রনির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কুষ্টিয়া শহরের
গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। তারা কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের
সামনে কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়ক অবরোধ করে। এসময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
জনমতের চাপে পুলিশ প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। ঘটনার রাতে অভিযুক্ত কনস্টেবল রনিকে কুষ্টিয়া
পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয় এবং পরে বিভাগীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “অভিযোগের সত্যতা যাচাই এবং
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত
প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে নানা আলোচনা চলছে। কেউ কেউ বিষয়টিকে
‘পেশাদারিত্বের চরম লঙ্ঘন’ হিসেবে উল্লেখ করছেন। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপকে সাধুবাদও জানিয়েছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত:
জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি আলোচিত রাজনৈতিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। ১৯৭৫ সালের
জুলাই মাসে তৎকালীন রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দেশের ইতিহাসে এক বিশেষ অধ্যায় রচিত
হয়। এ বিষয়ে যেকোনো বিতর্কিত মন্তব্যকে সমাজের একটি বৃহৎ অংশ নিন্দার চোখে দেখে থাকে।
সংক্ষেপে:অভিযুক্ত: ফারজুল ইসলাম রনি, কনস্টেবল, কুষ্টিয়া ট্রাফিক বিভাগ। অভিযোগ:
সামাজিক মাধ্যমে জুলাই বিপ্লব নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট। পদক্ষেপ: পুলিশ লাইনসে সংযুক্তির পর
সাময়িক বরখাস্ত। তদন্ত: তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন। প্রতিক্রিয়া: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও বিচার দাবি।
এ ঘটনায় প্রশাসনের পদক্ষেপ ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া আবারও প্রমাণ করে, দায়িত্বশীল পেশাজীবীদের
আচরণে সতর্কতা ও শালীনতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।