গঞ্জেরখবর ডেস্ক :-
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের (৩৯)
পরিবারে এখন শোকের মাতম চলছে।
তার ১০ বছর বয়সী ছেলে সোহান ও ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা তাদের বাবাকে হারিয়ে শোকে
মুহ্যমান। স্ত্রী লাকি বেগম (৩০) জানেন না, কিভাবে তার বিদ্যালয়পড়ুয়া সন্তানদের সান্ত্বনা দেবেন।
আজ ১২ জুলাই শনিবার বিলাপ করতে করতে লাকি বেগম বলেন, “পরিবারের একমাত্র আয়ের লোককে
ওরা খুন করেছে। এখন কিভাবে চলবে সংসার? দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কী হবে? আমরা কিভাবে বেঁচে
থাকব? কে আমাদের নিরাপত্তা দেবে? আমার সন্তান তার বাবাকে আর দেখবে না। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।”
গতকাল শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নিহত লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের মরদেহ ঢাকা থেকে বরগুনায়
নিয়ে আসেন স্বজনরা। সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে তার মায়ের
কবরের পাশে লাশ দাফন করা হয়। গ্রামের বাড়িতে এখন শুধুই মাতম চলছে।
স্বজনরা জানিয়েছেন, তারা বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এখনো হত্যাকারীদের লোকজন মুঠোফোনে হুমকি দিচ্ছেন।
স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, লাল চাঁদ যখন মাত্র সাত মাস বয়সী ছিলেন, তখন বজ্রপাতে তার বাবা আইউব
আলী মারা যান। এরপর জীবিকার তাগিদে মা আলেয়া বেগম বরগুনা ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান।
তখন থেকেই লাল চাঁদ ঢাকায় বসবাস করতেন। তিনি দীর্ঘদিন পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় ‘মেসার্স
সোহানা মেটাল’ নামের একটি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানটি ঘিরেই
হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত। স্বজনদের দাবি, প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে লাল চাঁদের সঙ্গে
এলাকার একটি পক্ষের বিরোধ তৈরি হয়। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
তালাবদ্ধ করে দেয় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। গত বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে লাল চাঁদকে
আটক করে চাঁদার জন্য দফায় দফায় চাপ দেওয়া হয়।