আবু সাইদ শওকত আলী,বিশেষ প্রতিনিধি:
যশোরের বেনাপোলে আলোচিত মোটরসাইকেল
সুজায়েতুজ্জামান প্রিন্স হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে ঘটনার ২১ বছর পর।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জয়ন্তী রানী দাস এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে উদ্ভাবক মিজানুর রহমান মিজানসহ চার
আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে
আরও তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শার্শা উপজেলার আমতলা গাতীপাড়া গ্রামের আক্কাস আলী মোড়লের ছেলে
মিজানুর রহমান মিজান, নিহত প্রিন্সের দুলাভাই; ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাটাডাঙ্গা গ্রামের
গোলাম মণ্ডলের ছেলে ইকবাল হোসেন; বেনাপোল কাগজপুকুর গ্রামের কালু ওরফে ঘাড়কাটা কালুর
ছেলে সেকেন্দার এবং একই গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে জসিম উদ্দিন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি মিজানুর রহমান ও সেকেন্দার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
অন্য দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে বলে
জানিয়েছেন অতিরিক্ত পিপি আব্দুর রাজ্জাক।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৪ সালের ২০ আগস্ট বিকেলে প্রিন্স নিজ বাড়ি চৌগাছা উপজেলার
পোড়াবাড়ি নারায়ণপুর গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরিবারের সদস্যরা
বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান পাননি।
পরদিন সকালে বেনাপোলের ছোট নিজামপুর গ্রামের একটি ধানক্ষেতে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার
করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনায় নিহতের মামা বকতিয়ার রহমান ২১ আগস্ট বেনাপোল পোর্ট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের
বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি সন্দেহ করেন যে প্রিন্সের মোটরসাইকেল আত্মসাতের
উদ্দেশ্যে তার দুলাভাই মিজান এই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আফজাল হোসেন মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের
উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে প্রিন্সকে হত্যা করা হয়েছে
বলে উল্লেখ করে মিজানসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
দীর্ঘ ২১ বছর পর বহুল প্রতীক্ষিত এই মামলার রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নিহত প্রিন্সের পরিবার।
তারা বলেন, দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর হলেও ন্যায়বিচার পাওয়া গেছে।
রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, পলাতক দুই আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।