জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বেনীপুর সীমান্তের ভারতের অভ্যন্তরে বিএসএফ‘র গুলিতে নিহত গরু ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজানের(৫০) লাশ গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বুধবার সন্ধ্যার দিকে বিজিবি‘র মাধ্যমে ফেরত পেল পরিবার। বিজিবি–বিএসএফ‘র মধ্যে কয়েক দফায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে অনেক জল্পনা–কল্পনা শেষে বিএসএফ বিজিবি‘র নিকট লাশ হস্তান্তর করেন।
ঘটনার প্রথমদিকে নিহত মিজানকে নিখোঁজ বলা হলেও ঘটনার পর জানা যায়,তিনি বিএসএফ’র গুলিতে নিহত হয়েছেন। বিএসএফ’র পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়। ফলে পরিবারের লোকজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। এদিকে বুধবার সন্ধ্যার দিকে লাশ হস্তান্তরের কথা থাকলেও বিএসএফ নানা অজুহাতে বিলম্ব করতে থাকে এবং সর্বশেষ সন্ধ্যা রাতে লাশ হস্তান্তর করেন।
মিজান উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের বেনীপুর ক্যাম্পপাড়ার আয়ুব আলীর ঘর জামাই। তিনি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকূপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত নবীছ উদ্দিনের ছেলে।
নিহতের স্ত্রী নাসিমা খাতুন বলেন,আমাদের গ্রামের মধু মন্ডলের ছেলে বাদল,আরিফুলের ছেলে জীবন হোসেন ও কওসার আলীর ছেলে ফারুক হোসেন ১৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আমার স্বামী মিজানকে বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে আমার স্বামী বাড়ীতে ফিরে না আসায় আমি খোঁজাখুঁজি করতে থাকি। এক পর্যায়ে বাদল আমাকে বলে চাচা(মিজান) আছে,চলে আসবে চিন্তা নেই। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে বাদল আমাকে দু‘হাজার টাকা দিয়ে বলে চাচা ভারতের মধ্য আছে,সমস্যা নেই। টাকা দিয়ে বাজার সদয় করে খাও। চাচার সাথে মোবাইলে কথা বলিয়ে দিবানি।
পরে বিকালের দিকে লোক মুখে জানতে পারি বিএসএফ ভারত সীমান্তের মধ্যে একজনকে গুলি করে মেরেছে! এ কথা শুনে আমার সন্দেহ সৃষ্টি হয় এবং খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি আমার স্বামীই হত্যা হয়েছে। ফেইসবুকে স্বামীর ছবি দেখে আমার স্বামীর লাশ সনাক্ত করি।
বিষয়টি বেনীপুর বিজিবিকে জানাই। বিজিবি–বিএসএফ কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে কয়েক দফায় পতাকা বৈঠক করেন। কিন্তু বিএসএফ প্রথম দিকে লাশের কথা অস্বীকার করেন। অবশেষে বুধবার সন্ধার দিকে আমার স্বামী মিজানের লাশ বিজিবির নিকট হস্তান্তর করেন। আমরা পুলিশের নিকট থেকে লাশ বুঝে নিই।
বেনীপুর ক্যাম্পের সুবেদার আতিয়ার রহমান বলেন,বিএসএফ‘র নিকট থেকে লাশ বুঝে পাওয়ার পর জীবননগর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করি।
নিহতের স্বজনেরা লাশ বেনীপুর থেকে নিজ বসত বাড়ী শৈলকুপা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে দাফনের জন্য নিয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান আমরা বিজিবির নিকট থেকে লাশ বুঝে পাওয়ার পর তা বিধি মোতাবেক নিহত মিজানের লাশ তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করি।