জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর পৌর শহরের পুরাতন লক্ষ্মীপুরে পাষন্ড ননদ,শ্বাশুড়ী,শ্বশুর ও ননদের মেয়েদের বিরুদ্ধে সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী দু’সন্তানের জননী গৃহবধু রহিমা খাতুনকে(২৫) মধ্যযূগীয় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা গৃহবধু নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এ ঘটনায় প্রবাসীর মদদ থাকার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি শুক্রবার বিকালের দিকে সংঘটিত হয়েছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধুকে জীবননগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিবেশীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার ব্যাপারে জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধুর পিতামাতা জেলা প্রশাসক,পুলিশ সুপার ও লোকমোর্চার সহযোগিতা ও হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ভুক্তভোগী পরিবার সুত্র জানান,জীবননগর পৌর শহরের পুরাতন লক্ষ্মীপুরের কলিম উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীরের(৩০) সাথে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নতুনপাড়ার প্রান্তিক কৃষক দলিল উদ্দিনের মেয়ে রাহিমা খাতুনের(২৫) গত ১০ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে আজমাইন(৭) নামের পুত্র ও
জান্নাতুল(৩) নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গৃহবধু রাহিমা খাতুনের বাবা দলিল উদ্দিন বলেন,রাহিমা আমার মেয়েদের মধ্যে সবার ছোট। তার সুখের জন্য যৌতুক বাবদ দফায় দফায় নগদ টাকা ও আসবাবপত্র এবং স্বর্ণালংকার দিয়েও মেয়েকে সুখি করতে পারলাম না। মেয়ের শ্বাশুড়ী ফাতেমা ও
ননদ নার্গিস দর্জাল প্রকৃতির। তাদের অত্যাচারে আমার মেয়েটার বিয়ের পর থেকে সুখ হল না! সর্বশেষ জামাতা জাহাঙ্গীরকে সৌদি আরবে পাঠানোর জন্য আমি ও আমার অন্য মেয়ে-জামাইরা তাকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ধার দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। সেই টাকা চাওয়া নিয়ে জামাই জাহাঙ্গীর আমার মেয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিদেশ থেকে তার বাবা,মা ও বোন এবং বোনের মেয়েদের দিয়ে আমার মেয়ে রাহিমাকে
শুক্রবার বিকালে নির্মম ভাবে নির্যাতন চালায়। তাদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাহিমা গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালাতে বাধ্য হয়।
নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রহিমা খাতুন জীবননগর হাসপাতাল চিকিৎসারত অবস্থায় বলেন,বিয়ের পর থেকে আমি আমার শ্বাশুড়ী,ননদ নার্গিসদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছি। আমার বাবা-মা তাদেরকে যৌতুক বাবদ বার বার মোটা অংকের নগদ টাকা,আসবাবপত্র দিলেও আমি তাদের নির্যাতন থেকে রক্ষা পাইনি। আমি চার মাস ধরে দু’সন্তানসহ আমার বাবা মায়ের বাড়ীতে থাকার পর শুক্রবার আমি স্বামী সংসারে গেলে আমার শ্বাশুড়ী ফাতেমা,ননদ নার্গিস ও ননদের মেয়ে তুলি ও জুলি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে বিকালের দিকে তারা আমাকে একের পর এক অত্যাচার নির্যাতন করতে থাকে। আমার ননদ আমাকে আত্মহত্যা করে মরতে বলে। আমি তাদের অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হই গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। প্রবাসী স্বামী জাহাঙ্গীরের মদদেই তারা আমাকে মারপিট করেছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর পৌরসভার সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল হোসেন খোকন বলেন,ঘটনার ব্যাপারটি আমি লোক মুখে শুনেছি। তবে কি কারণে এবং কারা মারপিট করেছে তা কেউ বলেনি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।