জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার আঞ্চলিক সড়ক হাসাদহ ইউনিয়নের পুরন্দরপুর-মাধবপুরে আবারও ছিনতাইকারী চক্র হানা দিয়ে ছিনতাই করতে ব্যর্থ হলেও ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের হামলায় ৩ জন পথচারী আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে একজন বিজিবি সদস্য রয়েছেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার মাধবপুর-পুরন্দপুর সড়কের বকুলতলা নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
আহত বিজিবি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান (৩০) ঢাকার পিলখানায় সদর দপ্তরে কর্মরত। এছাড়াও মোস্তাফিজুরের পিতা নজরুল ইসলাম ও চাচা মো.নায়েব আলী আহত হন।
এ ঘটনায় আহত বিজিবি সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের পিতা বাদী হয়ে মানিক মিয়া,ঠান্ডু ও মাজেদুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।
বিজিবি’র সদস্য মোস্তাফিজুর বলেন, শনিবার দিনগত রোববার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে ঢাকা থেকে স্ত্রী জান্নাতুল ইয়াসমিনসহ ছয় মাস বয়সী শিশু বাচ্চাসহ হাসাদহ বাজারে এসে পৌছাই। রাত অনেক হওয়ায় বাড়ীতে ফোন করলে আমার বাবা নজরুল ইসলাম ও চাচা নায়েব আলী একটি পাখি ভ্যান যোগে আমাদেরকে নিতে হাসাদহ বাজারে যায়।
হাসাদহ বাজার থেকে পাখি ভ্যান যোগে মাধবপুর-পুরন্দপুর সড়ক হয়ে আমরা বাড়ী যাচ্ছিলাম।
এ সময় উক্ত সড়কের বকুলতলা স্থানে পৌঁছানো মাত্র পাশে ওৎ পেতে থাকা ৮-১০ জন দূর্বৃত্ত হাতে লাঠিসোটা, হাসুয়া ইত্যাদি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমাদের পাখিভান গাড়ীটি থামিয়ে আমাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। দূর্বৃত্তরা আমার নিকট থাকা নগদ দু’লক্ষ টাকা,স্ত্রীর নিকট থাকা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় আমি তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করলে তারা আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। তারা আমার বাবা ও চাচাকেও মারপিট করে জখম করে। এ সময় আমার স্ত্রী ও শিশু বাচ্চাও সামান্য আহত হয়। আমাদের আর্তচিৎকারে গ্রামের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে দূর্বৃত্তরা তাদের এক জোড়া জুতা ও একটি টর্চ লাইট ফেলে পালিয়ে যায়। দূর্বৃত্তদের সাথে ধস্তাধস্তি কালে তিনজনকে চিনতে পারি। পরে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
ভ্যানচালক নায়েব আলী বলেন, শুক্রবার রাতে আমার ভাইপো তার স্ত্রী -সন্তান নিয়ে হাসাদহ বাজারে পৌঁছানোর খবর পেয়ে হাসাদহ বাজারে পাখিভ্যান তাদেরকে আনতে আমি ও আমার ভাই নজরুল ইসলাম যাই। তাদেরকে নিয়ে আমরা বাড়ীতে ফিরে যাওয়ার সময় শনিবার রাতে পুরন্দরপুর-মাধবপুর সড়কের বকুলতলা নামক স্থানে পৌঁছানো মাত্রই দূর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে আমাদের জিম্মি করে আমাদের হঠাৎ মারপিট শুরু করে। আমরাও তাদের সাথে ধস্তাধস্তি করতে থাকি।
এসময় লোকজন ছুটে গেলে তারা পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে মানিক নামের একজনকে ঘায়েল করি। এসময় তিনজনকে চিনতে পারলেও বাকীদেরকে চিনতে পারিনি।
স্থানীয়রা জানান, শুধু শনিবার রাতেই নয়,মাঝে মাঝে ওই সড়কে এমন ঘটনা ঘটে। এর আগে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ক্লিনিক থেকে ফেরার সময় কাজল হোসেনের ইজিবাইক থামিয়ে তাদেরকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কাজল ও তার চাচীকে হাত মুখ বেধে তার চাচীর একজোড়া স্বর্ণের একজোড়া কানের দুল,চেন,একটি মোবাইল ফোন, নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকাসহ একটি ইজিবাইক নিয়ে ডাকত সদস্যরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার আগে ২ অক্টোবর দুপুরে মাধবপুর বাজার থেকে আরিফের দোকানের সামনে একটি কালো রংয়ের পালসার মোটর সাইকেল চুরি হয়। তার আগে একটি আলমসাধু ছিনিয়ে নিয়ে যায়। একই সড়কে বার বার ছিনতাই ও দূর্বৃত্তরা হানা দিয়ে লুটপাটের ঘটনা ঘটালেও পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার কিংবা সনাক্ত করতে পারেনি বলে এলাকাবাসির অভিযোগ।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ওই সড়কে এমন অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেনি। শনিবার রাতে উনারা বাসায় ফিরছিলেন। এসময় রাস্তায় দুজন ব্যক্তি তাদের মারধর করলে তার বাপ-চাচা ছুটে আসলে আসামিরা পালিয়ে যান। এছাড়াও যাদের নামে অভিযোগ করেছে তারা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।অপরাধীদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।