মহেশপুর কানাইডাঙ্গায় সরকারী ইটভাটার ৫৪ বিঘা জমি বেদখলে নেই উদ্ধারের উদ্যোগ


মহেশপুর(ঝিনাইদহ)প্রতিনিধি:-

ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার ২নং ফতেপুর ইউনিয়নের কানাইডাঙ্গা মৌজায় ৫৪ বিঘা জমি সরকারের বেদখলে রয়েছে।

কেউ কেউ আবার সরকারের ওই জমি হাত বদল করে হাতিয়ে  নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।

ইতোমধ্যে রোবায়েদুল ইসলাম নামে একব্যক্তি ওই জমির মধ্যে থেকে ১৮ বিঘা জমি ক্রয় করে উচু সীমানা প্রাচীর দিয়ে ভিতরে এগ্রো ফার্ম তৈরী করেছে।

সম্প্রতি বিষয়টি নজরে এলে উপজেলা এবং জেলা প্রশাসন নড়েচড়ে বসলেও কোন কার্যকারি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।

একটি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৭ সালে কালীগঞ্জ-জীবননগর মহা সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে ইটের ভাটা তৈরীর জন্য ৩৬ জন মালিকের কাছ থেকে ৫৪ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে তৎকালিন সরকার। বুঝিয়ে দেওয়া হয় নায্য মূল্য।

এমনকি ওই জমি বাবদ ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয় জমির মালিকদের। ১০৩ নং কানাইডাঙ্গা মৌজার ২৬. ২৮, ২৫, ২৩, ২০, ৩৬, ৩৫, ২৭, ২৯,৩০, ৩১ দাগে ওই সব জমি অধিগ্রহণ করা হয়।

এখন পর্যন্ত কাগজে কলমে জমির শ্রেণী ভাটা থাকলেও সেখানে এখন এগ্রো ফার্ম করা হয়েছে। ।১৯৭২ সালে ওই জমিতে ভাটা নির্মাণ করে ইট পুড়িয়ে রাস্তার কাজ শেষ করা হয়।

এরপর দীর্ঘ সময় ওই জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। ওই সুযোগে জমির পূর্ববর্তী মালিকরা যার যার অংশে চাষ শুরু করে।

১৯৮৪-৮৫ সালে মাঠ জরিপের সময় সরকারের পক্ষে কোন খোজ খবর না রাখায় পূর্ববর্তী মালিকদের নামে হাল রেকর্ড লিপিবদ্ধ হয়।

ঐ সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে কেউ জরিপের সময় যোগায়োগ রক্ষা করেনি ফলে আর কাউকে ওই জমি দখলে কোন বেগ পেতে হয়নি।

হাল রেকর্ড অনুসারে ওই জমির মালিক হয়ে যায় পূর্ববর্তীরা। এরপর কেউ কেউ ওই জমি একাধিকবার হাত বদল করেছেন। আবার কেউ এখন পর্র্যন্ত একক মালিকানায় ওই জমি ভোগ দখল করে আসছেন।
এদিকে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ৮ টি দলিলে ওই জমির মধ্যে হতে ১৮ বিঘা জমি ক্রয় করেন যশোর জেলার আব্দুর রাজ্জাক খানের ছেলে রিয়াজ মেহমুদ খান ও রাশেদ মেহফুজ খান।মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী মোজাম্মেল হোসেনকে ম্যানেজ করে নিজেদের নামে নামপত্তন ও জমাখারিজ করেন ওই দুই ব্যক্তি, এমন অভিযোগ রয়েছে ।

এরপর চলতি বছরের ৫ ই ফেব্রæয়ারী এক কোটি টাকায় মহেশপুর সাব-রেজিস্ট্রী অফিসে ১০৮৪নং দলিলে ১৮ বিঘা জমি বিক্রয় করেন রোবায়েদুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যাক্তি কাছে।

রোবায়েদুল ইসলাম ওই জমির উচু সীমানা প্রাচীর তৈরী করে ভিতরে এগ্রো ফার্ম নির্মাণের কাজ শুরু করেন।
ওই জমির মধ্যে কানাইডাঙ্গা গ্রামের মিঠু মন্ডলের দুই বিঘা জমি রয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের কাছ থেকে সিএমবি ওই জমি অধিগ্রহণ করে ভাটা তৈরী করে। রাস্তা কাজ শেষ হলে ওই জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলো।

এরপর আমি ও নজরুল মিয়া তৎকালীন সড়ক ও জনপথ বিভাগের খন্ডকালীন চাকুরীরত ওই জমি সিএমবির কাছ থেকে লীজ নিয়ে হলুদ চাষ করতাম।

পরবর্তীতে মাঠ জরিপের সময় পূর্ববর্তী মালিকের নামে রেকর্ড হওয়ায় যার যার জমি সে দখল করে।

এতে সিএমবি কোন বাধা দেয়নি। পরে অনেকেই বেশির ভাগ জমি অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে।

আমাদের দুই বিঘা জমি রয়েছে যাতে এখনও চাষ করি।
এসিল্যান্ড শরীফ শাওন বলেন, ১৮ বিঘা জমির নামজারি আবদেন করলে বিষয়টি নজরে আসে।

ওই আবেদনটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। সেইসাথে কাগজপত্র যাচায়ের কাজ চলছে।

সব ঠিক থাকলে আমরা ওই জমিটি সরকারের দখলে নিয়ে নেব । তিনি স্থানীয় ফতেপুর ভূমি অফিসের কর্মকর্তাকে ঐ জমিতে স্থাপনা কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছিলো কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে।

স্থানীয় ভূমি অফিসের নায়েব হাফিজুর রহমান বলেন,কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য একাধিক বার বলা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি জমির নাম খারিজ করার জন্য আসলে সেগুলো বন্ধ করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রথীন্দ্রনাথ জানান,অল্প কিছুদিন হলো আমি দায়ীত্ব নিয়েছে পূর্ববর্তী য়ে ছিলো তার কাছ থেকে জেনে বিস্তারিত জানানো যাবে।

আমি ওই জমির বিষয়টি খুতিয়ে দেখবো। কাগজ পত্র যাচাই পূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এই বিষয়ে সরকারি জমি স্থাপনা নির্মাণ কারী রোবায়েদুল ইসলাম (অভি) বলেন ক্রয়সূত্রে জমি দখল নিয়ে নির্মাণ কাজ করছি তবে জমির নামপত্তন করতে কাগজপত্র ভূমি অফিসে জমা দিয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *