জীবননগর মিনাজপুরে বিরোধপুর্ণ জমি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে হানাহানি নারীসহ ৫ জন আহত সেনা সদস্য শামীমকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার মিনাজপুর বানপুরপাড়ায় বিরোধপুর্ণ জমি দখল করতে গিয়ে একই পরিবারের দু’পক্ষের মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদেরকে জীবননগর হাসপাতালে চিকিৎসা বাড়ী পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার ব্যাপারে সেনা সদস্য শামীমকে প্রধান করে তার শ্বশুর আব্দুল হান্নানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে। ঘটনাটি শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে সংঘটিত হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মিনাজপুর বানপুর পাড়ার মৃত মোক্তার হোসেনের মৃত্যুর পর সরকারী ৭৫  শতক খাস জমির মালিকানা নিয়ে তার সন্তানদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।

জমি নিয়ে মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে রবিউল হোসেনের সাথে তার অন্যান্য সন্তানদের আদালতে মামলাও চলমান রয়েছে। তারা উভয়পক্ষই জমির দখল দারিত্ব নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদে জড়িয়ে পড়ে।

একই ভাবে তারা শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে বিরোধপুর্ণ জমি বেদখল করা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটে। এ ঘটনায় নারীসহ কমপক্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন।

মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মতিয়ার রহমান বলেন,আমার বাবার মৃত্যুর পর আমাদেরকে গোপন করে সরকারী ৭৫ শতক খাস জমি পুরোটাই আমার মেজো ভাই রবিউল
ইসলাম(৬৫) তার নামে ডিসিআর কেটে নেয়। ঘটনাটি আমরা ৫-৬ ভাই বোন টের পেয়ে বিরোধীতা করি এবং আদালতে একটি মামলাও করি। কিন্তু আমার ভাই রবিউল হোসেন গায়ের জোরে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭ টার সময় বিরোধপুর্ণ জমিতে আমরা হলুদের চাষ করা কালে দখল করতে যায়।

এ সময় আমার ভাই রবিউল হোসেন ও তার বেয়াই সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামরা চালিয়ে আমার বৃদ্ধ বড় ভাই আবু বক্কর(৮০),ছোট ভাই আতিয়ার রহমান,ভাইপো সুজাউদ্দিন,ভাবী শিউলী বেগম ও আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে মারাত্মক ভাবে আহত করে।

রবিউল হোসেনের ছেলে সেনা সদস্য শামীম হোসেন ও আমিনুর আমার ভাইপো সুজাউদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়া আঘাত করে বাম হাত  ও মুখের একটি দাঁত ভেঙ্গে দিয়ে মারাত্মক ভাবে জখম করে।

শামীম হোসেন সেনা সদস্য হওয়ায় এবং তার প্রভাবশালী শ্বশুর সাবেক চেয়ারম্যান  আব্দুল হান্নানের দাপটে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। আমরা সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করি।

তারা আমাদের ওপর আবারও হামলার হুমকি দিচ্ছে। অভিযুক্ত রবিউল হোসেন বলেন,আমার বাবা বেঁচে থাকতেই জমি বিধি মোতাবেক সরকারের নিকট থেকে লিজ গ্রহন করে ভোগ দখল করে আসছি। আমি জমির বিরোধ মিটাতে অন্যান্য ভাইদেরকে বসে নিস্পত্তির কথা বলি। কিন্তু তারা তা না করে পুরো জমিই তাদের দখলে নেয়ার আমার ওপর একের পর এক হামলা-মামলা করে আসছেসুজাউদ্দিনের দাঁত ও হাত তো আগেই ভাঙ্গা।

সেই আগের ঘটনা এখন বলার কারণ কি বুঝতে পারছি না। সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন,আমি তো ঘটনার সময় আমার বাড়ীতে অবস্থান করছিলাম,তাহলে আমি সেখানে গিয়ে নেতৃত্ব দিলাম কি ভাবে? আমি সেই বাড়ীতে মেয়ে  দিয়েছি। তারা বিপদে পড়লে ডাকলে যেতেই হয়। তবে ঘটনার সময় আমার কোন অবস্থান সেখানে ছিল না।

বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন,ঘটনার কথা শুনেছি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ী ফিরে গেছে। বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে জানি।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম জাবিদ হাসান বলেন,ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *