জীবননগর অফিস:-
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষনার সাথে সাথে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রতিক নৌকার মাঝি হতে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা শুরু হয়েছে। অন্যদিকে জাতীয় পার্টি, বিএনপি,জামায়াতের নেতাকর্মিদের মধ্যে তেমন তোড়জোড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে না ভোটের মাঠে। আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা ভোটকে সামনে রেখে উজ্জীবিত হলেও বিএনপিসহ অন্য দলের নেতাকর্মিরা হিসাব-নিকাস করে মাঠে নামতে দিন গুনছেন। ফলে নৌকার পালে হাওয়া লাগলেও দোলা ধানের শীষে।
জীবননগর উপজেলার উথলী,মনোহরপুর,কেডিকে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহনের দিন আগামী ১৬ মার্চ ঘোষনার দু’দিনের মাথায় নির্বাচন কমিশন কর্তৃক উপজেলার বাঁকা,হাসাদহ ও রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন ওই এক তারিখে অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ ঘোষনা করেন। তফশিল ঘোষনার পর পরই আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশিরা নড়েচড়ে ওঠেন এবং মনোনয়ন পাওয়ার আশায় দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। উপজেলার ৮ টি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন আগামী ১৬ মার্চ ঘোষনা হওয়ায় উপজেলা ব্যাপী নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। চায়ের দোকানগুলোতে এখন ভোট নিয়ে বাক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। দলীয় প্রার্থী যাচাই-বাছাই নিয়ে তৃর্ণমুল নেতাকর্মিদের মধ্যে যেমন চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অন্যদিকে দলীয় উপজেলা-জেলা হাই কমান্ডও প্রার্থী নির্বাচনে চুল-চেরা বিশ্লেষণ। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও নেই বসে। মনোনয়ন নামের সোনার হরিণটা নিজের অনুকুলে দিতে ইতিমধ্যেই নানা কৌশলে নীতি-নির্ধারকদের নিকট ধর্ণা দিতে শুরু করেছেন।
জীবননগর উপজেলায় সর্বশেষ ঘোষিত তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশিদের আবেদন স্ব-স্ব ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটির নিকট জমা প্রদান করেছেন। বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান,আবুল হাসেম সরকার,সাখাওয়াত হোসেন ফরজ,শাহাব উদ্দিন,সাবেক মেম্বার রবিউল ইসলাম রবি,আব্দুর রহমান,হাবিবুর রহমান হাবু মাস্টার,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মর্তুজার ছেলে গোলাম মোক্তাদ্দির শাওন,ইউনিয়ন যুবলীগের সম্পাদক নিজাম উদ্দিন,রেজাউল হক,বাবুল আক্তার। হাসাদহ ইউনিয়ন পরিষদে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের আবেদনের তালিকায় রয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি বিশ্বাস,জীবননগর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন জালাল,হাবিবুর রহমান হবি বিশ্বাস,বাবলু রহমান টলো বিশ্বাস,মনোহরপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক,সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, মাহাবুবুর রহমান,অ্যাড.শাহিন রেজা এবং রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ শাহ,তার ছেলে কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ইমরানুল হাসান নয়ন,হাসাদহ হাইস্কুলের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান শাহিনুর মাস্টার,সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মীর্জা তাহাজ্জুত,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সাজ্জাদ হোসেন এবং যুবলীগ নেতা সাজ্জাদ বিশ্বাস। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের ৪০ জন নেতাকর্মি মনোনয়ন প্রত্যাশি হিসাবে আবেদন করেছেন। আবেদনের তালিকায় প্রবীণদের চেয়ে নবীনদের নামের তালিকা বেশ লম্বা।
এদিকে দলীয় মনোনয়ন কার কপালে জুঁটবে তা বিবেচনায় না নিয়েই মনোনয়ন প্রত্যাশিরা আগে ভাগে নির্বাচন মাঠে নিজেদের অবস্থানকে জানান দিতে ভোটারদের সাথে কুশলাদি বিনিময় করছেন। ভোটারদের মাঝেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চায়ের কাপে আলোচনার ঝড় উঠেছে। তবে এখনও পর্যন্ত বিএনপি জামায়াত কিংবা জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের চোখে পড়ার মত তেমন কোন তৎপরতা দলীয় ভাবে কিংবা স্বতন্ত্র ভাবেও দেখা যাচ্ছে না। তারপরও ভোটারদের মাঝে বিএনপির সম্ভাব্য বেশ কয়েকজন প্রার্থীদের নাম শোনা যাচ্ছে। নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে শেষ পর্যন্ত বিএনপির দলীয় প্রার্থী না থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে দলীয় নেতাকর্মি নির্বাচনী মাঠে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।