স্বপ্ন পূরণে বাধা দরিদ্রতা, ডাক্তার হতে চায় কোটচাঁদপুরের সামাউল

আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

দীর্ঘ পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের ফল পেয়েছে সামাউল ইসলাম।

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সে সুযোগ পেয়েছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে (এসএসএমসি)।

কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে দেখা দিয়েছে বড় বাধা। দরিদ্র সবজি বিক্রেতা বাবার পক্ষে ছেলেকে মেডিকেলে ভর্তি করানোর খরচ জোগানো সম্ভব হচ্ছে না।

সংগ্রামের গল্প

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়বামনদহ গ্রামের ছেলে সামাউল। বাবা তাজির উদ্দিন পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা।

সীমিত আয়ের সংসারে চরম অভাব-অনটনের মধ্যেও ছেলের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে গেছেন তিনি।

সামাউলের কঠোর পরিশ্রম আর মেধার ফল হিসেবে এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ অর্জন করেছে সে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছিল এই মেধাবী শিক্ষার্থী।

সাফল্যে আনন্দ, কিন্তু দুশ্চিন্তার ছায়া

মেডিকেল  কলেজে৷  ভর্তির সুযোগ  পাওয়ার খবরে সামাউলের পরিবারে ও বিদ্যালয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। শিক্ষকেরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। কিন্তু সেই আনন্দ বেশি সময় স্থায়ী হয়নি।

মেডিকেলে ভর্তি ও পড়াশোনার খরচের চিন্তায় ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে সামাউল ও তার পরিবার।

বাবা তাজির উদ্দিন অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, ‘আমি সবজি বিক্রি করে কোনোভাবে সংসার চালাই।

অনেক কষ্টে এখন পর্যন্ত ছেলেকে পড়িয়েছি। কিন্তু মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ানোর মতো সামর্থ্য আমার নেই।

আমি সমাজের হৃদয়বান মানুষদের সহায়তা চাই, যেন আমার ছেলে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারে।’

সহযোগিতার আশ্বাস

কোটচাঁদপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সোহেল আল মামুন বলেন, ‘সামাউল অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। আমি সবসময় ওকে সহযোগিতা করেছি। মেডিকেলের ফল পাওয়ার পরও সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছি।’

কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উছেন মে বলেন, ‘সামাউলকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে বলা হয়েছে। তার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

একটি সুযোগেই বদলে যেতে পারে জীবন

সামাউলের স্বপ্ন দেশের সেবা করা, মানুষের জীবন বাঁচানো। কিন্তু দারিদ্র্যের কারণে সেই স্বপ্ন যেন থমকে না যায়।

তার জন্য প্রয়োজন সহায়তা ও উদার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সমাজের স্বচ্ছল ও মানবিক ব্যক্তিরা এগিয়ে এলে সামাউলের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে, আর দেশ পাবে এক মেধাবী চিকিৎসক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *