আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ:-
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় প্রতারণার মামলায় মিঞা জিন্না আলম ডিগ্রি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলামকে দুই বছর তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১১ মার্চ) দুপুরে ঝিনাইদহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক রোমানা আফরোজ এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত তরিকুল ইসলাম হরিণাকুণ্ডু উপজেলার মাঠ আন্দুলিয়া গ্রামের আব্দুস সাত্তার মিয়ার ছেলে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে বিএম শাখায় নিয়োগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একই
কলেজের শিক্ষক কোহিনুর আক্তারের কাছ থেকে দুই দফায় ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু টাকা নেওয়ার পরও তাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেন।
প্রতারণার শিকার কোহিনুর আক্তার ২০২১ সালে তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন (মামলা নং: সিআর-২৮৮/২১)।
আদালত মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে তরিকুল ইসলামকে দুই বছর তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
জালিয়াতির মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও দুর্নীতি
তদন্তে উঠে আসে, ২০১৩ সালে জালিয়াতির মাধ্যমে মিঞা জিন্না আলম ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন উমেদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাব্দার হোসেন মোল্লা।
ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির জন্য ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি প্রয়োজন হলেও শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে ডিগ্রি পাস দেখিয়ে সুপারিশ পাঠান তৎকালীন অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম।
একইভাবে বিদ্যুৎসাহী পদে মনোনীত করা হয় মোস্তাফিজুর রহমানকে, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
২০১৩ সালের ২২ আগস্ট তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রয়াত আব্দুল হাইয়ের সুপারিশে তারা দায়িত্ব পান।
এরপর ২০১৫ সালের জুন মাসে সাতটি পদে জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে প্রায় এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তরিকুল ও সাব্দার হোসেন। এই অর্থ দুজন ভাগাভাগি করে নেন।
এছাড়া, নিরক্ষর সাব্দার হোসেন মোল্লাকে গাড়াগঞ্জ গার্লস স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখানো হয় এসএসসি পাস, যা প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা।
এই রায়ের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।