হরিণাকুণ্ডুতে কৃষিজমি নষ্ট করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

আবু সাইদ শওকত আলী, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার শাখারীদহ গ্রামে কাবিটা প্রকল্পের অধীনে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি রাস্তা নির্মাণ করতে গিয়ে কৃষিজমি ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফত-উত-দৌলা ঝন্টুর বিরুদ্ধে কৃষকদের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া

এবং বেশ কিছু হতদরিদ্র পরিবারের ঘরের পেছনে খনন কাজ চালিয়ে ঘরবাড়ি ঝুঁকির মুখে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ঘটনার পেছনের কথা:

হরিণাকুণ্ডু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কাবিটা প্রকল্পের আওতায় কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের শাখারীদহ গ্রামের আলতাফের বাড়ি থেকে খলিশাকুড়োর বিল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য ১৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

তবে প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত উৎস থেকে মাটি সংগ্রহ না করে, কৃষকদের ফসলি জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।

কৃষকদের ক্ষোভ:

প্রকল্পের কাজের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগ, অনুমতি ছাড়াই তাদের আবাদযোগ্য জমি থেকে রাতের আঁধারে এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।

এতে ধান, ভুট্টা ও মৌসুমি ফসল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শাখারীদহ গ্রামের কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, “আমাদের কোনো অনুমতি ছাড়া জমি থেকে মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে।

এতে ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে জমিগুলো চাষের অযোগ্য হয়ে পড়বে।”

আরেক কৃষক আব্দুর রহমান জানান, “প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী শ্রমিক দিয়ে কোদাল ব্যবহার করার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান তা মানেননি।”

চেয়ারম্যানের বক্তব্য:

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শরাফত-উত-দৌলা ঝন্টু বলেন, “প্রকল্পের স্বার্থেই মাটি সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে যদি কোনো কৃষকের ক্ষতি হয়ে থাকে, আলোচনা করে সমাধান করার চেষ্টা করব।”

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া:

হরিণাকুণ্ডু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বি এম তারিক-উজ-জামান জানান, “বিষয়টি আমি শুনেছি। প্রকল্পের বিল এখনো দেওয়া হয়নি। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

শেষ কথা:

এভাবে কৃষিজমি ধ্বংস করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *