ঝিনাইদহে বিমানবন্দর চাই: সময়ের দাবিতে সরব স্থানীয়রা

আবু সাইদ শওকত আলী,ঝিনাইদহ:-

ঝিনাইদহ, ১৭ এপ্রিল: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ঝিনাইদহে একটি পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর স্থাপনের দাবি দিন দিন জোরালো হয়ে উঠছে।

জেলার প্রায় ২৫ লক্ষ জনগণের দীর্ঘদিনের এই দাবিকে ঘিরে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘ঝিনাইদহে বিমানবন্দর চাই’ স্লোগান।

৬টি উপজেলা, ৬টি পৌরসভা এবং ৬৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ঝিনাইদহ জেলার বেশিরভাগ মানুষ জীবিকার তাগিদে বিদেশে অবস্থান করছেন।

প্রবাসী এই জনগোষ্ঠী দেশের অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স যোদ্ধা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

তবে ঢাকা থেকে ঝিনাইদহ শহরের দূরত্ব প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার হওয়ায় প্রবাসীদের যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা বলছেন, ঝিনাইদহ শহরের উপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একাধিক জেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ চলে গেছে, ফলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচিত। এই অবস্থানে একটি বিমানবন্দর নির্মিত হলে পুরো অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা এক নতুন মাত্রা পাবে।

জেলায় রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। এর মধ্যে রয়েছে দেশের খ্যাতনামা ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ভেটেরিনারি কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এবং কে-সি কলেজ। এছাড়া মহেশপুরে রয়েছে এশিয়ার বৃহৎ দত্তনগর কৃষি ফার্ম এবং কোটচাঁদপুরে বৃহৎ মৎস্য হ্যাচারি

ঐতিহাসিকভাবে সমৃদ্ধ ঝিনাইদহে রয়েছে বাউল সম্রাট লালন ফকিরের জন্মস্থান হরিশপুর, বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক বাঘা যতীনের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি, তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইলমিত্রের বসতভিটা, গাজী কালু চম্পাবতীর মাজার, মিয়ারদালান, নলডাঙ্গার জমিদারবাড়ির মন্দির, এবং বারোবাজারে সুলতানি আমলের মসজিদসহ বহু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

জেলার কালিগঞ্জে রয়েছে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান মোবারকগঞ্জ সুগার মিল ও এশিয়ার বৃহৎ বটগাছ। এ সবকিছু মিলিয়ে ঝিনাইদহ কেবল একটি জেলা নয়, বরং ঐতিহ্য, শিক্ষা, কৃষি, পর্যটন ও শিল্পে সমৃদ্ধ এক সম্ভাবনার নাম।

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও উন্নয়নকামী নাগরিকরা মনে করছেন, ঝিনাইদহে বিমানবন্দর নির্মাণ হলে-প্রবাসী নাগরিকদের যাতায়াত সহজ হবে,ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে,পর্যটন শিল্প বিকাশ পাবে,কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের সুযোগ বাড়বে।

তারা সংশ্লিষ্ট সরকারি মহলের প্রতি দাবি জানিয়েছেন, দ্রুত ঝিনাইদহে একটি আধুনিক বিমানবন্দর স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের

এই গুরুত্বপূর্ণ জেলাকে উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা হোক।

বিমানবন্দর চাই, বিমানবন্দর চাই,বিমানবন্দর চাই এই স্লোগানে এখন কাঁপছে গোটা ঝিনাইদহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *