বিশেষ প্রতিনিধি: মো. আবু সাইদ শওকত আলী
ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসে অর্থনৈতিক শুমারির কাজে অনিয়ম এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক পরিসংখ্যান তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত কর্মকর্তা পুলক কুমার দত্ত তাঁর স্ত্রী বনি দত্তকে সুপারভাইজার পদে নিয়োগ দেখিয়ে মাঠ পর্যায়ে কোনো কাজ না করেই শুমারির অর্থ তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪-এ কালীগঞ্জ উপজেলার ৭ নম্বর রায়গ্রাম ইউনিয়নে মোট ১২ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২ জন
সুপারভাইজার নিয়োগ পান। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে একজন ছিলেন বনি দত্ত, যিনি কাগজপত্র অনুযায়ী সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্ত হলেও মাঠ পর্যায়ে তাঁকে কেউ কখনো কাজ করতেদেখেননি।
শুমারি শুরুর পূর্বে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণেও তিনি উপস্থিত ছিলেন না বলে জানা গেছে।
স্থানীয় তথ্য সংগ্রাহক মিতু দাস, আখি দাস এবং জয়া বলেন, “আমরা কাজ করেছি ১৫ দিন। বনি দত্ত নামে কাউকে মাঠে দেখা যায়নি।
অথচ কাগজে তাঁর নাম ছিল রায়গ্রাম গ্রামের বাসিন্দা হিসেবে। কিন্তু রায়গ্রামে বনি দত্ত নামে কাউকে আমরা চিনিনা।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বনি দত্তের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্বামী পুলক কুমার দত্ত বলেন, “হ্যাঁ, আমার স্ত্রীর নামে নিয়োগ হয়েছিল।
কিন্তু কাজগুলো তো আমি করে দিয়েছি। সমস্যা কোথায়?” তবে, স্ত্রী স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়া সত্ত্বেও কীভাবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হলো, সে প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক আব্দুল আলিম বলেন, “উক্ত ইউনিয়নে যিনি নিয়োগ পেয়েছিলেন, তিনি প্রকৃতপক্ষে কাজ করেননি।
নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা পরিষ্কারভাবে একটি অনিয়ম।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও অর্থনৈতিক শুমারির নিয়োগ কমিটির সভাপতি দেদারুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ এর কার্যক্রম ১০ ডিসেম্বর শুরু হয়ে চলে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। সারাদেশে প্রায় ৯৫ হাজার তথ্য সংগ্রাহক এই শুমারিতে অংশ নেন।