গঞ্জেরখবর ডেস্ক:-
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের অধীনে “সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন” সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন।
তিনি সরকারের প্রতি পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে পারছেন না, দয়া করে বিদায় নিন।”
বৃহস্পতিবার মে দিবস উপলক্ষে কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে জাতীয় শ্রমিক পার্টি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, “আমরা চাই, যাঁরা রাজনীতি করতে চান, তাঁরা জনগণের সামনে আসুন। জনগণ যদি তাঁদের গ্রহণ করে, আমরাও তা মেনে নেব।
কিন্তু বর্তমান সরকার যে সংস্কারের কথা বলছে, তা অবাস্তব ও অকার্যকর।”
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা, নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও হয়রানি চলছে।
“আমরা আর অন্যায় সহ্য করব না,” বলেন কাদের। “দেশের অর্ধেক মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে, আমরা তা মেনে নেব না।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের ভাই জি এম কাদের আরও বলেন,
“নব্য ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত না হওয়া পর্যন্ত জাতীয় পার্টির সংগ্রাম চলবে। যারা ফ্যাসিবাদি পন্থা অনুসরণ করছে, তারা দেশের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে।”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে কাদের বলেন, “আপনি আমাদের
সম্মানের পাত্র, কিন্তু আপনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সংস্কারের নামে যে পরিকল্পনা দেওয়া হচ্ছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয়।
সেই দায়িত্ব নির্বাচিত সরকারের হওয়া উচিত।”
তিনি অভিযোগ করেন, “চাঁদাবাজি ও শোডাউনের রাজনীতি নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর মাধ্যমে আবার শুরু হয়েছে।
যারা এখনো সরকারে থেকেই দল পরিচালনা করছে, তাদের উচিত পদত্যাগ করে সরাসরি জনগণের মুখোমুখি হওয়া।”
কাদের বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকির মুখে। সাংবাদিকদের চাকরি হারানোর ভয়, টিভি স্টেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা
এসব যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এক ফ্যাসিবাদ বিদায় করেছি, আরেকটি গ্রহণ করতে চাই না।”
বেকারত্ব ও শ্রমিক সংকটের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “লাখো শ্রমিক বেকার। কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
সরকারকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় চালু করতে হবে এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে।”
কৃষি ও অর্থনীতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, “কৃষকরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। বাজারে দাম বাড়লেও কৃষকের হাতে টাকা নেই। ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরাও সংকটে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে বিদেশি বিনিয়োগ ও ঋণ আসবে না।”
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু,কো-চেয়ারম্যানএবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।