গঞ্জের খবর ডেস্ক:
চাকরি স্থায়ীকরণ, বয়সসীমা শিথিলসহ চার দফা দাবিতে ঝিনাইদহে কর্মবিরতিতে গিয়ে বিক্ষোভ
করেছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন
কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো)-এর লাইন সহকারীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল থেকে
শহরের বিদ্যুৎ অফিস প্রাঙ্গণে তারা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
এটি তাদের চলমান আন্দোলনের তৃতীয় দিনের কর্মসূচি।
প্রতিদিনের মতো সকাল ৯টা থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে লাইন সহকারীরা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড ও
বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে তাদের দাবির পক্ষে আওয়াজ তোলেন।
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন ইমামুল হক রকি, রিপন হোসেন, শাহীন আলম, শাকিল আহম্মেদসহ
আরও অনেকে। বক্তারা কর্মরত অবস্থায় লাইন সহকারীদের জীবনের ঝুঁকি, বেতন-ভাতা ও
চাকরির অনিশ্চয়তা তুলে ধরেন।
দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে:–১. চাকরি স্থায়ীকরণ: বহু বছর ধরে বিদ্যুৎ বিভাগে অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মরত লাইন সহকারীদের চাকরি স্থায়ী করার
দাবিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। ২. বয়সসীমা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল: বর্তমান নিয়োগ নীতিমালায় বয়স ও
শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত শিথিল করে অভিজ্ঞতা ও বাস্তব দক্ষতার ভিত্তিতে চাকরি নিশ্চিত করার দাবি জানান। ৩. বিকলাঙ্গ শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী:
যারা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়েও দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী
চাকরি স্থায়ীকরণ।
৪. মৃত্যুবরণকারী শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের চাকরি প্রদান: দায়িত্ব পালনের সময় দুর্ঘটনায়
নিহত শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত বিবেচনায় চাকরিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি করা হয়।
বক্তারা বলেন, “দিনরাত, ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ রক্ষায় কাজ করি।
অথচ আমাদের নেই কোনো চাকরির নিরাপত্তা, নেই নিয়মিত বেতন, নেই প্রভিডেন্ট ফান্ড বা
চিকিৎসা সুবিধা। তবুও আমরা দেশের সেবায় নিয়োজিত।”
তারা আরও অভিযোগ করেন, আন্দোলন ঠেকাতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের ভয়ভীতি
প্রদর্শন করা হচ্ছে। এমনকি কিছু জায়গায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার মাধ্যমে হয়রানি ও
বিভ্রান্তি সৃষ্টির অভিযোগও পাওয়া গেছে।
এসময় আন্দোলনকারীরা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত দাবি মানার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমাদের দাবি
দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে, যার দায়ভার বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।”
প্রেক্ষাপট:ওজোপাডিকোসহ দেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থায় দীর্ঘদিন ধরে অস্থায়ী ভিত্তিতে
নিয়োজিত লাইন সহকারীরা বৈষম্য ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্য দিয়ে কাজ করে আসছেন।
এই আন্দোলন শুধুমাত্র ঝিনাইদহে নয়, দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
বক্তারা সরকারের কাছে আবেদন জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের এই গুরুত্বপূর্ণ শাখার শ্রমিকদের জীবন-
জীবিকা ও মর্যাদার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হোক।